(বাঁ দিকে) শরদ পওয়ার। অজিত পওয়ার (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
এনসিপিতে ফের ভাঙনের ইঙ্গিত! অজিত পওয়ারকে ছেড়ে আবারও শরদ পওয়ারের শিবিরে ভিড়তে চলেছেন দলের ১৮-১৯ জন বিধায়ক। সোমবার এমনই দাবি করলেন শরদের নাতি তথা এনসিপি (শরদচন্দ্র পওয়ার) নেতা রোহিত পওয়ার। রোহিত জানান, মহারাষ্ট্রের বিধানসভায় বাদল অধিবেশন শেষ হওয়ার পরেই ১৮-১৯ জন বিধায়ক দলবদল করে এনসিপির শরদ শিবিরে যোগ দেবেন। ওই বিধায়কেরা শরদ এবং তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলেও দাবি করেন আদিত্য।
সোমবার সংবাদমাধ্যমের সামনে অজিত বলেন, “বহু এনসিপি বিধায়ক রয়েছেন, যাঁরা ২০২৩ সালের জুলাই মাসে দলে ভাঙনের পরেও শরদ পওয়ার এবং অন্য শীর্ষনেতাদের বিরুদ্ধে কুমন্তব্য করেননি।” এই সব বিধায়ক আবার শরদ শিবিরে ফিরলে, তাঁদের যে আপত্তি নেই, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন রোহিত।
আগামী ২৭ জুন থেকে মহারাষ্ট্র বিধানসভায় বাদল অধিবেশন শুরু হচ্ছে। চলবে ১২ জুলাই পর্যন্ত। কেন দলবদল করতে চাওয়া এনসিপি বিধায়কেরা বাদল অধিবেশন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চাইছেন, তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন রোহিত। তাঁর কথায়, “নিজেদের বিধানসভা কেন্দ্রের উন্নয়ন তহবিলে বরাদ্দ আদায়ের জন্য ওই বিধায়কেরা বিধানসভার বাদল অধিবেশনে যোগ দেবেন। তাই তাঁরা ওই সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন।”
২০১৯ সালের বিধানসভা ভোটে মহারাষ্ট্রের ৫৪টি আসনে জয়ী হয়েছিল সাবেক এনসিপি। কিন্তু ২০১৯ সালের জুলাই মাসে কাকা শরদের নেতৃত্বাধীন দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন ভাইপো অজিত। একনাথ শিন্ডের শিবসেনা এবং বিজেপি জোট সরকারের শরিক হয়ে উপমুখ্যমন্ত্রী হন তিনি। দলের ৫৪ জন বিধায়কের মধ্যে ৪০ জনই অজিতকে সমর্থন করেন। পরিষদীয় শক্তির বিচারে অজিতের গোষ্ঠীকেই ‘প্রকৃত’ এনসিপি হিসাবে স্বীকৃতি দেয় নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনী প্রতীক ঘড়িরও দাবিদার হন অজিত। শরদের নেতৃত্বাধীন সাবেক এনসিপি পরিচিত হয় এনসিপি (শরদচন্দ্র পওয়ার) নামে।
লোকসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর দেখা যায়, দলে ভাঙন সত্ত্বেও আটটি আসনে জয়ী হয়েছে শরদের দল। মাত্র একটি আসনে জয়ী হয়েছে অজিতের এনসিপি। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির কাছে অজিতের কদর কমার ইঙ্গিত মিলেছে। পূর্ণমন্ত্রিত্ব চাইলেও এনসিপির এক জনকে কেন্দ্রে প্রতিমন্ত্রী করার প্রস্তাব দেয় পদ্মশিবির। যদিও সেই প্রস্তাবে সম্মত হয়নি অজিত শিবির। এর মধ্যেই আবার রাজ্যসভায় নিজের স্ত্রী সুনেত্রা পওয়ারকে পাঠাতে চলেছেন অজিত। তা নিয়েও দলের অন্দরে ক্ষোভ-বিক্ষোভ রয়েছে বলে মহারাষ্ট্র রাজ্য রাজনীতিতে গুঞ্জন। আগামী অক্টোবর মাসেই মরাঠাভূমে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে অজিত শিবিরে ফাটল চওড়া হওয়ার ইঙ্গিত মিলছে বলেই মনে করা হচ্ছে।