গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
জমি বণ্টনে দুর্নীতির অভিযোগে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা সিদ্দারামাইয়ার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করল কর্নাটকের লোকায়ুক্ত পুলিশ। সিদ্দারামাইয়ার পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী পার্বতী, শ্যালক মল্লিকার্জুন স্বামী এবং দেবরাজু নামে এক ব্যক্তির নামও এফআইআর-এ ‘অভিযুক্ত’-র তালিকায় রয়েছে বলে জানানো হয়েছে তদন্তকারী সংস্থার তরফে।
‘মাইসুরু নগরোন্নয়ন বিভাগ’ (মুডা)-এর জমি বেআইনি ভাবে বিলি করার অভিযোগ রয়েছে সিদ্দারামাইয়ার বিরুদ্ধে। পার্বতী এবং মল্লিকার্জুন নামে ৫৬ কোটি টাকার বিনিময়ে মাইসুরুর অভিজাত এলাকায় ১৪টি জমি বরাদ্দ করা হয়েছিল বলে তথ্যের অধিকার আইনে প্রাপ্ত জবাবে জানা গিয়েছিল। তথ্যের অধিকার কর্মী স্নেহময়ী কৃষ্ণ অভিযোগ তোলেন, বাজারদরের তুলনায় অনেক কম দামে বরাদ্দ হয়েছিল ওই জমি। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গত অগস্টে সিদ্দারামাইয়ার বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমতি দিয়েছিলেন কর্নাটকের রাজ্যপাল থাওয়ার চাঁদ গহলৌত। চলতি মাসের গোড়ায় কর্নাটক হাই কোর্ট তাতে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল।
বুধবার বেঙ্গালুরুর বিশেষ এমপি-এমএলএ আদালত জমি বণ্টনে দুর্নীতির অভিযোগে সিদ্দারামাইয়ার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছিল লোকায়ুক্ত পুলিশকে। সিদ্দারামাইয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ‘মুডা’র অধিগৃহীত জমির তুলনায় অনেক বেশি মূল্যের গুরুত্বপূর্ণ ও ভাল জমি ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাইয়ে দিয়েছেন পার্বতীকে। এমনকি, তার মধ্যে মহীশূরের কাসারে ৩.১৬ একর জমির আইনি নথিও পার্বতীর কাছে ছিল না বলে অভিযোগ। এ ছাড়া দেবরাজুর কাছ থেকে জমি কিনে তা পার্বতীকে দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে কর্নাটক সরকার নিয়ন্ত্রিত ‘মুডা’ বিরুদ্ধে।
সিদ্দারামাইয়া অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, আইন মেনেই সব হয়েছে। কোনও অনিয়ম হয়নি। এমনকি, শনিবার নির্বাচনী বন্ডে তোলাবাজির অভিযোগে বেঙ্গালুরুর বিশেষ আদালত কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের নির্দেশ দেওয়ার পরে তাঁর ইস্তফার দাবি তোলেন সিদ্দারামাইয়া। অন্য দিকে, লোকায়ুক্ত পুলিশ এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরুর পরে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে সরব হয়েছেন কর্নাটকের বিজেপি নেতৃত্ব। তবে সেই দাবি পুরোপুরি নস্যাৎ করে দিয়েছেন সিদ্দারামাইয়া। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গেও তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন। খড়্গের যুক্তি, গোধরা পরবর্তী হিংসার ঘটনায় একাধিক মামলা হলেও গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং সে রাজ্যের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পদত্যাগ করেননি।