এমএনএস নেতা রাজ ঠাকরে (বাঁ দিকে)। রোহিত শর্মা এবং বাবর আজ়ম (ডান দিকে)। — ফাইল ছবি।
বিশ্বকাপের সূচি ঘোষণা হয়েছে। ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচের ভার পেয়েছে গুজরাতের আমদাবাদ। বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্টেডিয়ামেই বাবর আজ়মদের মোকাবিলায় নামবেন রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলীরা। কিন্তু সেই ম্যাচ আদৌ হবে কি? এই প্রশ্ন উঠছে, কারণ রাজ ঠাকরের মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার (এমএনএস) এক নেতা সেই ম্যাচের তীব্র বিরোধিতা শুরু করেছেন। তাঁর দাবি, ভারতের ঘটে চলা সমস্ত হিংসার ঘটনায় হাত রয়েছে পাকিস্তানের। তাই সেই দেশের সঙ্গে খেলা ভারতের অনুচিত।
এমএনএস নেতা সন্দীপ দেশপাণ্ডের প্রশ্ন, ‘‘যারা আমাদের উপর হামলা করে, সেনাকে খুন করে, আধিকারিকদের জন্য যৌনতার ফাঁদ পাতে, সে রকম দেশের সঙ্গে কি আমাদের খেলা উচিত?’’ তিনি বলছেন, ‘‘মনে রাখবেন, সমস্ত সন্ত্রাসবাদী হামলার নেপথ্যে রয়েছে পাকিস্তান। এমন কোনও দেশকে কি আমাদের স্বাগত জানানো উচিত? এটা রাজনীতির বিষয়ই নয়, এটা দেশের ব্যাপার।’’ এর পরেই ম্যাচ আয়োজনের বাস্তব সমস্যার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘যখন এই ধরনের ম্যাচ খেলা হয়, তখন ওদের লোকও (পাকিস্তানের মানুষ) হাতে পতাকা নিয়ে মাঠে আসেন। আমাদের কি এ সব বরদাস্ত করতে হবে? এটা নিয়ে দেশ জুড়ে আলোচনা হওয়া দরকার।’’
এমএনএসের অবশ্য দাবি, ও সব সন্দীপের মনের কথা। দল এমনটা মনে করে না। যদিও দলীয় নেতার মন্তব্যে যে বিপাকে পড়েছে এমএনএস, তা লুকিয়ে রাখা যাচ্ছে না। মহারাষ্ট্রের রাজনীতির সমীকরণ বলছে, ইদানীং বিজেপি তথা এনডিএর কাছাকাছি এসে পড়েছে রাজ ঠাকরের দল। আবার সেই বিজেপিরই অন্যতম শীর্ষ নেতা অমিত শাহের পুত্র জয় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সচিব। ক্রিকেট রাজনীতির ক্ষেত্রে বিজেপির দাপটও অজানা নয়। জয়ের ঘরের মাঠ, আমদাবাদে পাকিস্তানের ম্যাচ ফেলা কেন্দ্রের শাসকদলের অজান্তে হয়েছে এমনটা মানতে নারাজ রাজনৈতিক মহল। এই প্রেক্ষিতে বিজেপি-ঘনিষ্ঠ দলের নেতা ম্যাচ আয়োজন নিয়ে বিষোদ্গার করছেন, তা রাজ ঠাকরেকে বেকায়দায় ফেলে দিয়েছে। কারণ, এমএনএসের রাজনীতির মূল সূত্র উগ্র জাতীয়তাবাদের মিশেলে পাকিস্তান বিরোধিতা। ফলে দলীয় লাইন মেনে সন্দীপ যা বলেছেন, তার প্রকাশ্য বিরোধিতা করা রাজের পক্ষে কঠিন। সব মিলিয়ে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিজের রাজ্যে বিশ্বকাপের সবচেয়ে ‘হাই ভোল্টেজ’ ম্যাচ আয়োজন নিয়ে চাপান-উতোর তুঙ্গে।