সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার শিকার হয়েছিলেন আগেই, এ বার আইনমন্ত্রীর পদ হারালেন কিরেন রিজিজু। ফাইল চিত্র।
বিচারপতি নিয়োগে ‘কলেজিয়াম ব্যবস্থার স্বচ্ছতা’ থেকে সমলিঙ্গে বিয়ের আইনি স্বীকৃতি সংক্রান্ত মামলায় ‘সুপ্রিম কোর্টের অধিকার’— সাম্প্রতিক সময় নানা অছিলায় বিচার বিভাগের সমালোচনা করেছিলেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার শিকারও হয়েছিলেন! বিতর্কিত সেই কিরেন রিজিজুকে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অরুণাচলের ওই বিজেপি নেতাকে কেন্দ্রীয় ভূবিজ্ঞান মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
কিরেনের জায়গায় আইন মন্ত্রকের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে রাজস্থানের বিজেপি সাংসদ অর্জুন রাম মেঘওয়ালকে। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে দফতর বদল সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। বিজেপির অন্দরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বার বার প্রকাশ্যে আলটপকা মন্তব্য করে সরকারের বিড়ম্বনা বাড়িয়েছেন কিরেন। বিচার বিভাগের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে সুপ্রিম কোর্টের উষ্মা এবং ভর্ৎসনার মুখে পড়েছেন। তাঁকে সরিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী সুপ্রিম কোর্টকে ‘ইতিবাচক বার্তা’ দিতে চেয়েছেন বলেই দলের ওই সূত্রের মত।
সম্প্রতি, কেন্দ্র-নিযুক্ত দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নরের ‘এক্তিয়ার’ থেকে রাহুল গান্ধীকে সাজা দেওয়া গুজরাতের নিম্ন আদালতের বিচারকের ‘নিয়ম ভেঙে পদোন্নতি’-সহ নানা মামলায় শীর্ষ আদালতে ধাক্কা খেয়েছে পদ্মশিবির। এই পরিস্থিতিতে মোদী সরকারের এই পদক্ষেপ ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি একটি আলোচনা সভায় রিজিজু বলেছিলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের কয়েক জন ‘ভারতবিরোধী গোষ্ঠী’র সদস্য! ওই গোষ্ঠীর কাজ বিচার বিভাগকে সরকারের বিরুদ্ধে প্ররোচিত করা!’’ ওই মন্তব্যের জেরে সংসদে সাফাই দিতে হয়েছিল তাঁকে। তার আগে বিচারপতি নিয়োগে কলেজিয়াম ব্যবস্থায় অস্বচ্ছতার অভিযোগ তুলেছিলেন রিজিজু। সে জন্য তাঁকে শীর্ষ আদালতের ভর্ৎসনাও শুনতে হয়েছিল।
কিন্তু এর পরেও সুপ্রিম কোর্টকে নিশানা করা বন্ধ করেননি কিরেন। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রীর পদে থেকে প্রকাশ্যে সমলিঙ্গে বিয়ের আইনি অধিকার সংক্রান্ত বিচারাধীন বিষয় নিয়ে মন্তব্য করেছেন। এমনকি, সরাসরি শীর্ষ আদালতের এক্তিয়ার নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। কয়েক সপ্তাহ আগে একটি আলোচনা সভায় কিরেন বলেন, ‘‘বিবাহের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দেশের জনগণকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আদালত এই জাতীয় সমস্যাগুলি নিষ্পত্তি করার স্থান নয়।’’ এর পরে তিনি বলেন, ‘‘দেশের জনগণের মনোভাব প্রতিফলিত হয় নির্বাচিত আইনসভাতেই।’’