Karnataka Assembly Election 2023

কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা বুধে! সিদ্দা না শিবকুমার, শেষ বেলায় কোন অঙ্ক কংগ্রেসে?

মুখ্যমন্ত্রিত্ব ঘিরে টানাপড়েনের মধ্যেই মঙ্গলবার ‘অল ইন্ডিয়া বীরশৈব মহাসভা’র তরফে কর্নাটকের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী পদে এক জন লিঙ্গায়েত নেতাকে বসানোর দাবি তোলা হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২৩ ০০:১৯
Share:

সিদ্দারামাইয়া, মল্লিকার্জুন খড়্গে এবং ডি কে শিবকুমার। ফাইল চিত্র।

তাঁর বিরুদ্ধে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তি থাকার অভিযোগের তদন্তে নেমেছে সিবিআই। গত সেপ্টেম্বরে বেঙ্গালুরুর গ্রামীণ জেলার কনকপুরা, ডোড্ডা আলাহল্লী এবং সন্থে কোডিহল্লীতে কর্নাটক প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি শিবকুমারের মালিকানাধীন বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছিল তারা। ডিসেম্বরে সিবিআই হানা দিয়েছিল বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শিবকুমারের একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। এরই মাঝে বেআইনি আর্থিক লেনদেনের অভিযোগে আর এক কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-র জিজ্ঞাসাবাদের মুখেও পড়তে হয়েছিল তাঁকে।

Advertisement

কংগ্রেসের একটি সূত্র জানাচ্ছে, কর্নাটক বিধানসভা ভোটে দলের বিপুল জয়ের জন্য শিবকুমারের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করলেও তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলার কারণে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী বাছাই করার ক্ষেত্রে দ্বিধাগ্রস্ত কংগ্রেস শীর্ষনেতৃত্ব। দলের প্রতি দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকলেও শেষ পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির ‘অতিসক্রিয়তা’ শিবকুমারের বিপক্ষে যেতে পারে। আর এখানেই এগিয়ে রয়েছেন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী সিদ্দারামাইয়া। তা ছাড়া কর্নাটকের নবনির্বাচিত কংগ্রেস বিধায়কদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশও সিদ্দারামাইয়াকে চাইছেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের অগস্টে কর্নাটকের তৎকালীন মন্ত্রী শিবকুমারের বিরুদ্ধে ৭০টি জায়গায় অভিযান চালিয়েছিল আয়কর দফতর। এর পর আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগে ২০১৮ সালে মামলা দায়ের করে ইডি। ২০২০ সালে অক্টোবরে দুর্নীতির অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে তদন্তে নামে সিবিআই।

Advertisement

কর্নাটকে মুখ্যমন্ত্রী বাছাই করতে মঙ্গলবার কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গে বৈঠক করেন রাহুল গান্ধী। সেখানে প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্দারামাইর পক্ষে মত দিয়েছেন বলেও কংগ্রেসের ওই সূত্রের খবর। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কর্নাটক কংগ্রেসের দুই মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীই খড়্গের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এআইসিসির একটি সূত্র জানাচ্ছে, বিকেল ৫টার সময় খড়্গের ১০ রাজাজি মার্গের বাংলোয় গিয়ে প্রায় আধ ঘণ্টা বৈঠক করেন শিবকুমার। তিনি চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরে পৌঁছন সিদ্দারামাইয়া।

কংগ্রেস সূত্রের খবর, বুধবার বেঙ্গুলুরু গিয়ে কংগ্রেস পরিষদীয় দলের বৈঠকে আনুষ্ঠানিক ভাবে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করবেন কংগ্রেস সভাপতি। বৃহস্পতিবার শপথ নিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী এবং মন্ত্রিপরিষদের কয়েক জন সদস্য। সিদ্দারামাইয়া চলে যাওয়ার পরে এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপাল যান খড়্গের বাড়িতে। সেখানে ঢোকার আগে বলেন, ‘‘শীঘ্রই কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করা হবে।’’ এর কিছু ক্ষণ পরে কর্নাটকের দায়িত্বপ্রাপ্ত এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালাও পৌঁছন ১০ রাজাজি মার্গে।

প্রসঙ্গত, ২২৪ আসনের কর্নাটক বিধানসভায় এ বার ১৩৫টি জিতে নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা পেয়েছে কংগ্রেস। সহযোগী ‘সর্বোদয় কর্নাটক পক্ষ’ জিতেছে ১ আসনে। রবিবার নবনির্বাচিত কংগ্রেস বিধায়কদের বৈঠকে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী মনোনয়নের ভার দেওয়া হয় খড়্গেকে। পাশাপাশি, মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্ডের নেতৃত্বে ৩ কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষককে বিধায়কদের সঙ্গে ব্যক্তিগত স্তরে আলোচনা করে মুখ্যমন্ত্রী পদে তাঁদের ‘পছন্দ’ জানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। মঙ্গলবার সেই রিপোর্ট জমা পড়েছে দলের সর্বভারতীয় সভাপতির কাছে।

মুখ্যমন্ত্রিত্ব ঘিরে টানাপড়েনের মধ্যেই মঙ্গলবার ‘অল ইন্ডিয়া বীরশৈব মহাসভা’র তরফে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী পদে এক জন লিঙ্গায়েত নেতাকে বসানোর দাবি তোলা হয়েছে। সংগঠনের সভাপতি তথা প্রবীণ কংগ্রেস বিধায়ক শামানুরু শিবশঙ্করাপ্পা বলেন, ‘‘কর্নাটকে কংগ্রেস বিধায়কদের মধ্যে লিঙ্গায়েতরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। দলের তরফে এ বার ৪৬ জন লিঙ্গায়েত নেতাকে টিকিট দেওয়া হয়েছিল। তাঁদের ৩৭ জন জিতে এসেছেন। ২০১৮-য় জিতেছিলেন মাত্র ১৩ জন। তাই আমরা এক জন লিঙ্গায়েত নেতাকে মুখ্যমন্ত্রী করার দাবি জানাচ্ছি।’’ প্রাক্তন মন্ত্রী শামানুরু নিজেকেই মুখ্যমন্ত্রিত্বের দাবিদার হিসাবে তুলে ধরতে চাইছেন বলে কংগ্রেসের অন্দরের খবর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement