ইডির তলব নিয়ে কেন্দ্রের মোদী সরকারকে নিশানা কে কবিতার। — ফাইল ছবি।
দিল্লি আবগারিকাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করতে তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কেসিআরের কন্যা তথা বিআরএস (আগে নাম ছিল টিআরএস) নেত্রী কে কবিতাকে সমন পাঠিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এই বিষয়ে এ বার কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করলেন কবিতা। তাঁর অভিযোগ, এ সব কেন্দ্রের ভয় দেখানোর কৌশল।
দিল্লির আবগারি নীতিতে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সেই দুর্নীতিতেই কবিতার যোগ খুঁজে পাচ্ছেন তদন্তকারীরা। তাই জিজ্ঞাসাবাদ করতে কবিতাকে আগামী ৯ মার্চ দিল্লিতে ইডির দফতরে আসতে বলে সমন জারি করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। কিন্তু এই সমনের নেপথ্যে রাজনীতি দেখছে বিআরএস। কবিতা সরাসরি নিশানা করেছেন মোদী সরকারকে। তিনি জানিয়েছেন, তিনি এবং তাঁর পার্টি কেন্দ্রের ব্যর্থতাকে প্রকাশ্যে আনার কাজ অব্যাহত রাখবে এবং উজ্জ্বল ভারতের লক্ষ্যে লড়াই চালিয়ে যাবে।
সূত্রের খবর, কবিতাকে হায়দরাবাদের ব্যবসায়ী অরুণ রামচন্দ্র পিল্লাইয়ের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে পারেন ইডি আধিকারিকেরা। গত সোমবার ইডি বর্ণিত ‘দক্ষিণ লবি’র অন্যতম অরুণ গ্রেফতার হন। এ বার কবিতাকে তাঁর সামনে বসিয়ে জেরা করতে চায় ইডি। তাতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। যদিও একে রাজনৈতিক ভাবে বিরোধীদের ভয় পাওয়ানোর কৌশলের সঙ্গে যুক্ত করেছেন কেসিআর-কন্যা। বিবৃতি প্রকাশ করে জানিয়েছেন, আগামী ১০ মার্চ দিল্লির যন্তরমন্তরে একটি ধর্না কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। সেই কর্মসূচিতে বিজেপি বিরোধিতার সুর আরও চড়া করা হবে। সেই কারণেই পূর্বঘোষিত কর্মসূচির ঠিক আগের দিন তাঁকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা ডেকে পাঠালেন।
বিআরএস নেত্রী জানিয়েছেন, ইডির সঙ্গে সমস্ত রকম সহযোগিতা করতে তিনি প্রস্তুত। কিন্তু পূর্বঘোষিত কর্মসূচি থাকায় তিনি ইডির তলবে সাড়া দিয়ে ৯ মার্চ দিল্লির অফিসে যেতে পারবেন না। আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করে বিকল্প সময়ের জন্য তিনি ইডির কাছে আবেদন জানাবেন বলেও জানিয়েছেন।
কেসিআর-কন্যা কি সত্যিই দুর্নীতিতে যুক্ত? তার জবাব এখনও মেলেনি। কিন্তু আবগারি মামলায় মণীশ সিসৌদিয়ার গ্রেফতারির পর কবিতাকে সমন পাঠানোর ঘটনায় রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ছে। বিআরএসের তরফ থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণের ধার আরও বৃদ্ধি করার কৌশল নেওয়া হয়েছে। পাল্টা জবাব দিচ্ছে বিজেপিও।
বিধানসভা ভোট আসছে তেলঙ্গানায়। এ বার সেই রাজ্যে নিজের ক্ষমতা কায়েম করতে চায় বিজেপি। তাদের সামনে মূল বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন ক্ষমতাসীন কেসিআর। বিআরএসের অভিযোগ, ভোটের লড়াইয়ে সরাসরি কেসিআরকে হারানো যাবে না বুঝেই তাঁর পরিবারকে কলঙ্কিত করার অপচেষ্টা শুরু করেছে মোদী সরকার। তারই প্রথম পদক্ষেপ কন্যা কবিতাকে দুর্নীতি মামলায় জেরা করতে দিল্লি ডেকে পাঠানো। ঘটনাচক্রে, এই কবিতাই সম্প্রতি মোদীকে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, ‘‘ভোটমুখী রাজ্যে মোদীর আগে ইডি পৌঁছয়, বাচ্চারাও এটা জানে!’’