মৃত হর্ষিতা ব্রেল্লা। অভিযুক্ত পঙ্কজ লাম্বা (ইনসেটে)। — ফাইল চিত্র।
লন্ডনের হর্ষিতা ব্রেলার মৃত্যু ঘিরে রহস্যে মিলল চাঞ্চল্যকর তথ্য। গত ১৪ নভেম্বর গাড়ির ডিকি থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তদন্তকারীদের সন্দেহ, ওই যুবতীকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। পুলিশি তদন্তের মধ্যেই প্রকাশ্যে এল আরও এক তথ্য। মৃতার পরিবারের দাবি, তাদের মেয়ে দিন কয়েক আগে ফোনে জানিয়েছিল, তাঁর স্বামী তাঁকে বাঁচতে দেবেন না! খুন করবেন!
দিল্লির বাসিন্দা হর্ষিতার (২৪) সঙ্গে চলতি বছরের মার্চ মাসে ইংল্যান্ড-নিবাসী পঙ্কজ লাম্বার বিয়ে হয়েছিল। তার পর থেকে ইংল্যান্ডেই থাকতেন তাঁরা। দেহ উদ্ধারের সপ্তাহখানেক আগে আচমকাই নিখোঁজ হয়ে যান হর্ষিতা। কোনও ভাবেই যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না তাঁর সঙ্গে। শেষমেশ ১৪ নভেম্বর পূর্ব লন্ডনের ব্রিসবেন রোডে দাঁড়িয়ে থাকা একটি গাড়ির ডিকি থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। মৃতার পরিবার প্রথম থেকেই দাবি করে আসছে, হর্ষিতাকে খুন করেছেন তাঁর স্বামী।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হর্ষিতার মা সুদেশ কুমারী দাবি করেন, মৃত্যুর কয়েক সপ্তাহ আগে মেয়ের সঙ্গে কথা হয়েছিল। পঙ্কজ তাঁর জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছিলেন। স্বামীর কাছে ফিরে যেতে রাজি ছিলেন না হর্ষিতা। বার বার বলতেন, ‘‘আমাকে মেরে ফেলবে।’’ হর্ষিতার সম্পর্কে বলতে গিয়ে সুদেশ জানান, তাঁর মেয়ে কখনই কারও সঙ্গে ঝামেলায় জড়াতেন না।
সুদেশের দাবি, হর্ষিতার থেকে তাঁর স্বামীর সম্পর্কে শোনার পর দিল্লি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু পুলিশ তাঁদের কথায় কর্ণপাত করেনি। মেয়ের জন্য বিচার চাইছে হর্ষিতার পরিবার। তাদের দাবি, পঙ্কজ প্রায়ই হর্ষিতাকে মারধর করতেন। চাপ দিতেন পণের জন্য। হর্ষিতার দিদি সনিয়া বলেন, ‘‘বাবা অনেক যৌতুক দিয়েছিলেন। তার পরেও সন্তুষ্ট হননি পঙ্কজ।’’ তাঁর দাবি, পণের জন্য তাঁর বোনকে মারধর করতেন পঙ্কজ। বাপের বাড়ি থেকে টাকা চাইতে বাধ্য করতেন। এই মারধরের কারণে হর্ষিতা স্বামীর সঙ্গে থাকতেন না। একটি কাজ নিয়ে অন্য জায়গায় থাকতেন। তার পরেও হর্ষিতার বেতনের টাকা পঙ্কজ ছিনিয়ে নিতেন বলে দাবি করেছেন সনিয়া। হর্ষিতার বাবা সাবির ব্রেল্লার কথায়, ‘‘নিজের সব টাকা মেয়ে স্বামীকে দিয়ে দিত। ও ভাবত, সব ঠিক হয়ে যাবে। এ রকম হবে, বুঝতে পারেনি।’’
তবে হর্ষিতার অভিযোগে অগস্ট মাসে এক বার গ্রেফতারও হয়েছিলেন পঙ্কজ। কিন্তু পরে শর্তসাপেক্ষে জামিন পেয়ে যান। ঘটনার পর থেকেই ‘বেপাত্তা’ পঙ্কজ। তাঁর খোঁজ চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।