এমনই অবস্থা আবাসনগুলির। নিজস্ব চিত্র
আবাসনের মধ্যেই স্বাস্থ্যকর্মীর উপরে হামলা হওয়ায় আতঙ্কে রয়েছেন মানকর গ্রামীণ হাসপাতালের নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা। শুক্রবারের এই ঘটনার পরে তাঁরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও আবাসনের পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের ক্ষোভ, যে আবাসনগুলিতে তাঁরা রয়েছেন, সেগুলি বেহাল। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তাঁরা। পূর্ব বর্ধমান জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জয়রাম হেমব্রম বলেন, “ঘটনার কথা শুনেছি। পুলিশে অভিযোগ করা হয়েছে।”
হাসপাতাল চত্বরে থাকা আবাসনে শুক্রবার বিশ্রাম নিচ্ছিলেন স্বাস্থ্যকর্মী দীপ্তিকণা চৌধুরী। অভিযোগ, সেই সময় আবাসনের বারান্দা দিয়ে দুই দুষ্কৃতী তাঁর ঘরে ঢুকে গলায় ছুরি চালিয়ে চম্পট দেয়। তিনি বর্তমানে বর্ধমান মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শনিবার কিছুটা সুস্থ আছেন দীপ্তিকণা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ছ’জন চিকিৎসক, ১০ জন নার্স ও ছ’জন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। হাসপাতালের ভিতরে ৮-১০টি সিসি ক্যামেরা হয়েছে। হাসপাতালে দু’জন নিরাপত্তারক্ষী আছেন। দেখা গেল, হাসপাতালের সীমানাটি বেশ বড়। চারদিক বড় বড় গাছে ভর্তি। তারই এক দিকে রয়েছে সাতটি আবাসন। তবে ওই আবাসনগুলিতে সবাই থাকেন না। হাসপাতালের পিছনের দিকে হওয়ায় বেশ ফাঁকা ফাঁকা রয়েছে আবাসনগুলি। দেওয়ালের পলেস্তরা খসে পড়েছে। জানলা-দরজা ভাঙা।
নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের ক্ষোভ, বর্ষার সময় ছাদ থেকে জল পড়ে। এই সময়ে আবাসন চত্বর জঙ্গলে ভরে যায়। সাপের উপদ্রব বাড়ে। তাঁদের অভিযোগ, আবাসনের অদূরেই একটি গাছের তলায় মদ্যপানের আসর বসে। এ নিয়ে দীপ্তিকণা বেশ কয়েক বার প্রতিবাদও করেছেন। এই হামলার সঙ্গে সেই ঘটনার যোগ আছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ।
হাসপাতালের সিস্টার ইনচার্জ স্বপ্না দাস জানান, তিনি একটি আবাসনে একাই থাকেন। তাঁর অভিযোগ, হাসপাতালের আবাসনে আগে চুরির মতো ঘটনাও ঘটেছে। কিন্তু শুক্রবার যে ঘটনা ঘটেছে, তা কল্পনা করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, “আমি দীর্ঘ দিন বিভিন্ন হাসপাতালে কাজ করেছি। কোথাও কোনও দিন ভয় লাগেনি। কিন্তু এই ঘটনার পরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি। আমাদের আরও নিরাপত্তা দরকার।” এক্সরে টেকনিশিয়ান কৈলাস মণ্ডল বলেন, “আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। এ ধরনের ঘটনা কাম্য নয়। আবাসনের নিরাপত্তা জোরদার করার প্রয়োজন।” মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জয়রাম বলেন, “হাসপাতালে যে সব সমস্যা রয়েছে, সেগুলি নিয়ে দ্রুত আলোচনা করে পদক্ষেপ করা হবে।”
এ দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এসিপি (কাঁকসা) সুমনকুমার জয়সওয়াল, বুদবুদ থানার আধিকারিকেরা। এসিপি বলেন, “তদন্ত শুরু করেছি। তবে ওই স্বাস্থ্যকর্মীর সঙ্গে কথা না বললে পুরো বিষয়টি বোঝা যাবে না।” তাঁর দাবি, হাসপাতালের নিরাপত্তার জন্য এখানে পুলিশ থাকে।