জিএসটির এই নজিরবিহীন পতনের জন্য দায়ী নোটবন্দিই, তোপ রাহুল গাঁধীর। —ফাইল চিত্র
নোটবন্দি নিয়ে পাশা খেলেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। চার বছর পর তার কুফল মিলছে। এ ভাবেই জিডিপি-র সঙ্গে নোটবন্দি জুড়ে দিয়ে নয়া আক্রমণ শানালেন রাহুল গাঁধী। টুইটারে ভিডিয়ো বার্তায় রাহুলের তোপ, নোটবন্দির দু’টি লক্ষ্য ছিল সরকারের— অসংগঠিত ক্ষেত্রকে ধ্বংস করা এবং সেই টাকায় শিল্পপতিদের ঋণ মকুব করা। এর বিরুদ্ধে দেশবাসীকে একজোট হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করার আহ্বানও জানিয়েছেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি।
সোমবার কেন্দ্রীয় সরকার ২০২০-২১ অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকের জিডিপি (গ্রস ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট)-র পরিসংখ্যান প্রকাশ করে কেন্দ্র। তাতে দেখা যায় গত অর্থবর্ষের এই সময়ের তুলনায় জিডিপি ২৩.৯ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়েছে। ৪০ বছরের ইতিহাসে এমন নজির নেই। এই ফল প্রকাশ্যে আসতেই বিরোধীরা সরকারকে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছে। রাহুল গাঁধী নিজেও সেই দলে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার ফের ভিডিয়ো বার্তায় ওয়েনারের কংগ্রেস সাংসদের তোপ, ‘‘২০১৬ সালে যে ঘুঁটি ছুড়ে দেওয়া হয়েছিল, ২০২০-তে তার ভয়ঙ্কর ফল সামনে এসেছে।’’
এ দিন রাহুলের মূল নিশানা ছিল নোটবন্দি। গরিব, কৃষক, দিনমজুর, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী তথা অসংগঠিত ক্ষেত্রের উপর আক্রমণ ছিল বলে মন্তব্য করে নোটবন্দির ইতিহাস সম্পর্কে দেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। কী ভাবে ২০১৬সালের ৮ নভেম্বর রাত ৮টায় রাতারাতি ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিল করা হয়েছিল এবং তার জেরে ব্যাঙ্কের সামনে দীর্ঘ লাইন, নগদের অভাবে অসংগঠিত ক্ষেত্রের করুণ অবস্থার কথা তুলে ধরেছেন। এর পর প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘কালো টাকা কোথায় গেল? কোনও উত্তর নেই। দ্বিতীয় প্রশ্ন, নোটবন্দিতে দেশের গরিব মানুষদের কী লাভ হল? উত্তর, কিছুই না।’’
আরও পড়ুন: ঘৃণা-ভাষণে অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়কের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করল ফেসবুক
তা হলে ফায়দা কাদের হল? রাহুলের জবাব, ‘‘সুবিধা পেয়েছেন কোটিপতিরা। আপনাদের ঘর থেকে টাকা নিয়ে সেই টাকা এই সব শিল্পপতির ধার মকুব করানোর কাজে লাগিয়েছে সরকার।’’ রাহুলের আরও অভিযোগ, আরও একটি সুপ্ত লক্ষ্য ছিল সরকারের— অসংগঠিত ক্ষেত্রকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা। রাহুলের যুক্তি, ‘‘আমাদের অসংগঠিত অর্থনৈতিক ক্ষেত্র নগদের উপর চলে। ছোট দোকানদার, শ্রমিক, ক্ষেতমজুর— সবাই নগদ টাকায় কাজকর্ম করেন।’’ নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করে রাহুল বলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নিজে বলেছেন ক্যাশলেস ভারত চান। ক্যাশলেস ভারত হলে এই অসংগঠিত ক্ষেত্র তো পুরো ধ্বংস হয়ে যাবে। এই ক্ষেত্র তো নগদ ছাড়া চলেই না। লোকসান কার হল? সেই ছোট দোকানদার, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, দিন আনা দিন খাওয়া মানুষদের।’’
আরও পড়ুন: ফের রাষ্ট্রপুঞ্জে মুখ পুড়ল পাকিস্তানের, দুই ভারতীয়কে জঙ্গি ঘোষণার প্রস্তাব খারিজ
দেশবাসীকে এক হয়ে এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ডাক দিয়ে রাহুল বলেন, ‘‘নোটবন্দি অসংগঠিত ক্ষেত্রের উপর আক্রমণ ছিল। এই আক্রমণকে আমাদের বুঝতে হবে। পোর দেশকে একজোট হয়ে এর বিরুদ্ধে লড়তে হবে।’’