দিল্লির কিশোরী খুনে অভিযুক্ত সাহিল।— ফাইল চিত্র।
পথচারীদের মধ্যে থেকে কেউ এক জন যদি এগিয়ে আসতেন, বাধা দিতেন, তা হলে হয়তো তাঁর কন্যা বেঁচে যেত। সন্তানকে হারাতে হত না। কিন্তু পথচারীরা দেখেও না দেখার ভান করে পাশ কাটিয়ে গিয়েছিলেন। কিশোরীর মায়ের আক্ষেপ, “হয়তো ওঁদের মেয়ে, বোন নেই।”
দিন কয়েক আগে দিল্লির রোহিণীর শাহবাদ ডায়েরি এলাকায় এক কিশোরীকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে সাহিল নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। ২১ বার কোপানোর পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে পাথর দিয়ে মাথা থেঁতলে দিয়েছিলেন অভিযুক্ত। রাজধানীর বুকে ভিড় এলাকায় এমন ঘটনায় তোলপাড় চলছে গত কয়েক দিন ধরেই।
এক কিশোরীকে প্রকাশ্যে খুন করা হচ্ছে, অথচ কেউ এগিয়ে আসেননি। কন্যাকে হারিয়ে পথচারীদের ভূমিকা নিয়ে আক্ষেপের সুর ধরা পড়েছে কিশোরীর মায়ের কথায়। তিনি সাংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আমার একটি মাত্রই সন্তান ছিল। এখন আর সে নেই।” এর পরই কিছুটা উষ্মার সুরে তিনি বলেন, “ঘটনার দিন যাঁরা পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন তাঁদের কন্যাদের সঙ্গে যদি এ রকম ঘটনা ঘটত, তাঁরা কি চুপ থাকতে পারতেন? তাঁদের মধ্যে কেউ এক জনও যদি এগিয়ে আসতেন তা হলে মেয়েটা আমার বেঁচে যেত। কিন্তু কেউ এগিয়ে এলেন না।” কিশোরীর মায়ের কথায়, “যে সব পথচারী দেখেও না দেখার ভান করেছেন, তাঁদের হয়তো মেয়ে, বোন নেই। আর সে কারণেই এই ঘটনা ঘটল।”
কিশোরীর মা জানান, যদি তাঁর সামনে এমন ঘটনা ঘটত, তা হলে তিনি অন্তত আটকানোর চেষ্টা করতেন। তাঁর কথায়, “হামলাকারীকে নিরস্ত করার জন্য অন্তত দু’একটি পাথর ছুড়েও মারতাম। মেয়েটিকে অন্তত মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করতাম। হয়তো ছুরির ঘায়ে আহত হত, কিন্তু ওকে মরতে দিতাম না।” কিন্তু তাঁর কন্যার সঙ্গে সে দিন যা ঘটল, পথচারীরা যে ভাবে সাক্ষী থাকলেন, যে ভাবে সবাই দেখার পরও এড়িয়ে গেলেন, তা সত্যিই কল্পনা করা যায় না বলেও মন্তব্য করেছেন কিশোরীর মা।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “মানবিকতার মৃত্যু হয়েছে। সে দিনও মানবিকতার মৃত্যু হয়েছিল রাস্তায়।”