হিমাচলের কুলুতে বৃহস্পতিবার হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল বেশ কয়েকটি বহুতল। ছবি: টুইটার।
টানা বৃষ্টি আর ধসে নাজেহাল হিমালয়ের দুই রাজ্য হিমাচল প্রদেশ আর উত্তরাখণ্ড। দুই রাজ্যে বুধবার পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের। শুধু হিমাচলেই মঙ্গলবার মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। তাঁদের মধ্যে মান্ডি এবং শিমলায় ধসে চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে সাত জনের। তিন জনের মৃত্যু হয়েছে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে। ডুবে মৃত্যু হয়েছে আরও দু’জনের। অন্য দিকে উত্তরাখণ্ডের পৌড়ীতে বুধবার এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।
হিমাচলের ১২ জেলার মধ্যে শিমলা-সহ ছয়টি জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে মৌসম ভবন। শিমলা, কাংড়া, কুলু, মান্ডি, সোলান এবং সিরমুরে আগামী ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টির তাণ্ডব আরও বাড়বে বলেই চূড়ান্ত সতর্কবার্তা জারি করেছে তারা। অন্য দিকে, শিমলা, সিরমুর, কাংড়া, চম্বা, মান্ডি, হামিরপুর, সোলান, বিলাসপুর এবং কুলু— এই নয় জেলাতে হড়পা বানের সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে হিমাচলের কুলুর আনিতে ভূমিধসের জেরে হুমড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে বেশ কয়েকটি বহুতল। সেই ঘটনার ভয়ঙ্কর একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। যদিও ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, পাহাড়ের গায়ে জনবহুল একটি এলাকা। গায়ে গায়ে লাগোয়া প্রচুর বহুতল। আচমকাই সেই বহুতলগুলির মধ্যে কয়েকটি তাসের ঘরের মতো ধসে পড়ল। চারদিকে তখন চিৎকার, চেঁচামেচি আর আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু হয়ে গিয়েছিল। যদিও স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, বহুতলগুলিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় তিন আগেই খালি করে দেওয়া হয়েছিল। ফলে মৃত্যুর ঘটনা এড়ানো গিয়েছে। কিন্তু যে ভিডিয়োটি প্রকাশ্য এসেছে, তা শিউরে ওঠার মতোই দৃশ্য।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ১০টা নাগাদ এই ঘটনা ঘটেছে। ভেঙে পড়া বহুতলগুলির মধ্যে বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্ক দফতর ছিল। তবে জুলাই থেকে ভারী বৃষ্টির কারণে এই এলাকায় বিপদ আঁচ করেই বেশ কিছু বাড়ি চিহ্নিত করে তা আগেভাগেই খালি করে দেওয়া হয়েছিল। বুধবার হড়পা বানের জেরে ধস নামায় কুলু-মান্ডি সড়ক পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। শয়ে শয়ে গাড়ি রাস্তায় আটকে। ধসের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২১ নম্বর (মান্ডি-কুলু) এবং ১৫৪ নম্বর (মান্ডি-পঠানকোট) জাতীয় সড়ক। গত কয়েক দিনের বৃষ্টি আর ধসে হিমাচলে ৭০৯টি সড়ক বন্ধ। বহু সড়কে ফাটল ধরেছে। কোনও কোনও সড়ক আবার হড়পা বান আর ধসে ভেসে গিয়েছে।
রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর, বর্ষার মরসুমের শুরু থেকে অর্থাৎ গত ২৪ জুন থেকে এখনও পর্যন্ত ২৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে হিমাচলে। ৪০ জন নিখোঁজ। শুধু অগস্টেই হিমাচলে মৃত্যু সংখ্যা ১২০। অন্য দিকে উত্তরাখণ্ডে পিন্ডারী নদী এবং সেটির শাখানদী প্রাণমতীর জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় চামোলি জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। মৌসম ভবন জানিয়েছে, ২৪ অগস্ট রাজ্যের বেশি কিছু জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হবে।