বুধবার হায়দরাবাদে দলিত যুবক নাগারাজুকে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে সুলতানার বাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে। টুইটার থেকে নেওয়া।
‘বাঁচলে তোমার সঙ্গেই বাঁচব। আর মরতে হলেও তোমার পাশেই। তোমার জন্য মরতে পারি।’ ২৫ বছরের তরতাজা যুবক নাগারাজুর বলা এই কথাগুলিই এখন পাগলের মতো আউড়ে যাচ্ছেন সদ্য স্বামীহারা সৈয়দ আশরিন সুলতানা ওরফে পল্লবী। গত বুধবার হায়দরাবাদে দলিত যুবক নাগারাজুকে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে সুলতানার বাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে। কারণ, দুই প্রাপ্তবয়স্কের বিয়েতে আপত্তি ছিল মেয়ের বাড়ির। জাত আলাদা যে!
কান্নায় ভেঙে পড়ে নাগারাজুর স্ত্রী পল্লবী বলছেন, ‘‘আমাদের বিয়ের আগে থেকেই আমি ওকে বোঝানোর চেষ্টা করছিলাম অন্য কাউকে বিয়ে করে নিতে। কারণ আমি চাইনি, আমার জন্য ওর কোনও বিপদ হোক। বাড়িতে আমাদের ব্যাপারটা জানাজানি হতেই ওকে খুনের হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ও শুনল না।’’
গত বুধ বার রাত ন’টা নাগাদ সরুরনগর তহশিলদারের কার্যালয়ের সামনে নাগারাজুকে প্রথমে ছুরি মারা হয়। তার পর চলে পরের পর কোপ। মৃত্যু হয়েছে বোঝার পর চম্পট দেয় আততায়ী। গোটা ঘটনা দাঁড়িয়ে দেখেছেন অনেকে। উৎসাহীদের ফোনে ঘটনার ভিডিয়ো রেকর্ডিংও ধরা আছে । কিন্তু এক জনও নাগারাজুকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেননি।
সুলতানার প্রশ্ন, ‘‘কেন এক জনও এগিয়ে এলেন না নাগারাজুকে বাঁচাতে?’’ সাহায্যের আকুতি সত্ত্বেও এগিয়ে আসেননি কেউ। তা হলে হয়তো আজ তাঁর স্বামীকে এ ভাবে চলে যেতে হত না। স্বামীকে হারিয়ে সুলতানার আক্ষেপ, ‘‘পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তে কেউ এ রকম সাহায্য চাইলে মানুষের এগিয়ে আসা উচিত। এই জন্যই তো আমরা মানুষ।’’ স্বামী হারানোর শোকে কাতর স্ত্রী বলছেন, ‘‘১৫ থেকে ২০ মিনিট ধরে ওর উপর হামলা চলল। কিন্তু কেউ বাঁচাতে এগিয়ে এল না!’’
মাত্র দু’মাস আগে পরিবারের অমতে বিয়ে করেছিলেন সুলতানা ও নাগারাজু। তার পর থেকেই ঝামেলার শুরু। যা শেষ হল, সম্মানরক্ষার নামে নৃশংস হত্যাকাণ্ডে।