প্রতীকী ছবি
অন্যায়, অনিয়ম দেখলে তিনি খোদ বিধায়ককেও কথা শোনাতে ছাড়েন না। মুখের উপরে কেটে দেন ফোন। এ হেন পুলিশ অফিসারকে প্রেমের জালে ফেলে বিয়ে করতে গিয়েছিল এক প্রতারক। কিন্তু বাগদান পর্বের পরে প্রেমিকের স্বরূপ জানতে পেরেই অসমের নগাঁও থানার মহিলা পুলিশের আইসি জুনমণি রাভা নিজে হবু স্বামীকে গ্রেফতার করলেন।
গত বছর মাজুলিতে নৌকা দুর্ঘটনার পরে বেআইনি ভাবে নৌকা চালানোয় কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছিলেন তখন মাজুলিতে কর্মরত জুনমণি। তাদের ছাড়ানোর জন্য বিহপুরিয়ার শাসক দলের বিধায়ক অমিয়কুমার ভুঁইঞা জুনমণিকে ফোন করলে জুনমণি তাঁকে পাল্টা শুনিয়ে দেন, “আপনারা মন্ত্রী-বিধায়ক নিজেরাই আইন বানান, আবার নিজেই পুলিশকে সেই আইন ভাঙতে বলছেন!” অগ্নিশর্মা বিধায়কের মুখের উপরে, ফোন রেখেও দিয়েছিলেন জুনমণি।
মাজুলিতে থাকার সময়ই জুনমণির সঙ্গে আলাপ ও প্রেম রানা পোগাগের। কথাবার্তায় চৌখস রানা নিজেকে ওএনজিসির জনসংযোগ বিভাগের কর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়েছিল। গত বছর ৮ অক্টোবরে ধুমধাম করে তাঁদের বাগদান পর্ব সম্পন্ন হয়। বিয়ে হওয়ার কথা ছিল এ বছর। ইতিমধ্যে নগাঁওতে বদলি হন জুনমণি। রানা জানায়, তার বদলি হয়েছে শিলচরে। কিন্তু কিছুতেই সে শিলচরে না গিয়ে মাজুলিতে থেকে যাওয়ায় জুনমণির সন্দেহ হয়। বিয়ে করতেও ঢিলেমি করছিল সে। জুন বলেন, ‘‘সম্প্রতি রানা নগাঁওয়ে এসে আরও কয়েক জনের থেকে প্রতারণা করে টাকা নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। কপাল ভাল, তাঁরা আগে আমার কাছে এসে বিষয়টি জানান। পরবর্তী কালে তিন জন ব্যক্তির কাছ থেকে আমি জানতে পারি, রানা ওএনজিসির বিভিন্ন প্রকল্পের নাম করে টাকা নিয়েছে। ২৫ লক্ষ টাকার একটি বিল পাশ না হওয়ার বিষয় নিয়ে নাগাড়ে জেরা করায় সে সব স্বীকার করে।”
জুনমণি রানার ব্যাগ তল্লাশি করে ওএনজিসির ভুয়ো সিল ও নথিপত্র পান। জানা যায়, কর্তা তো দূর, ওএনজিসিতে পাঁচ বছরের চুক্তিতে পাওয়া সামান্য চাকরিও রাখতে পারেনি রানা। তার পরেই হবু স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে তাঁকে গ্রেফতার করেন জুনমণি। তিনি বলেন, “রানা ওএনজিসির নামে একটি গাড়ি ব্যবহার করত, সঙ্গে রাখত দেহরক্ষী। জেনেছি, সেই গাড়িও ওএনজিসির নাম করে ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। দেহরক্ষীর বেতন সে নিজেই দিত। মাজুলিতেও রানার বিরুদ্ধে বেশ কিছু প্রতারণার অভিযোগ আছে। তার ট্যাব, ল্যাপটপ, মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেখানেও অনেক লেনদেনের প্রমাণ রয়েছে।”