ত্রিপুরা হাইকোর্ট।
রিলায়েন্স গোষ্ঠীকে দেওয়া ত্রিপুরা সরকারের বরাত খারিজ করে দিল হাইকোর্ট।
প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়া সত্ত্বেও রিলায়েন্স গোষ্ঠীর ‘রিলায়েন্স লাইফ সায়েন্স প্রাইভেট লিমিটেড’-কে ত্রিপুরা ক্যানসার হাসপাতালে একটি জীবনদায়ী ওষুধ সরবরাহের বরাত পাইয়ে দিয়েছিল বিজেপি সরকার। সরকারের দেওয়া এই বরাত খারিজ করে ত্রিপুরা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এ এ কুরেশি এবং বিচারপতি শুভাশিস তলাপাত্রের ডিভিশন বেঞ্চ দরপত্রের অন্যতম প্রতিযোগী বায়োকনকে এই বরাত দেওয়ার নির্দেশ দিল বিপ্লব দেবের সরকারকে। একই সঙ্গে ওষুধের দাম কমানোর ব্যাপারে বায়োকনকেও রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
এই মামলার অন্যতম আইনজীবী কল্যাণ নারায়ণ ভট্টাচার্য জানান, সরকারি দরপত্রের বিজ্ঞাপনে এই দু’টি সংস্থাই অংশ নিয়েছিল। রিলায়েন্সই ছিল সর্বনিম্ন দরদাতা। কিন্তু অন্য শর্ত পূরণে ব্যর্থ হলেও দর কমের কারণ দেখিয়ে বায়োকনকে বাদ দিয়ে রিলায়েন্সকেই রাজ্য সরকার বরাত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানান তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সুদীপ রায়বর্মন। এবং তার পরেই সুদীপবাবুকে মন্ত্রিসভা থেকে বিপ্লব দেব সরিয়ে দেন।
আইনজীবী কল্যাণবাবু বলেন, দরপত্রের অন্যতম শর্ত ছিল, সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে দেখাতে হবে যে তারা তিন বছর ধরে এই ওষুধটি তৈরি ও বিক্রি করছে। কিন্তু রিলায়েন্স যে শংসা পত্র জমা দিয়েছিল তা সঠিক ছিল না। ২০১৬ সালে দিল্লি হাইকোর্ট তাদের বিরুদ্ধে একটি আদেশ জারি করে পরবর্তী দু’বছর এই ওষুধ উৎপাদন ও বিক্রি বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল। বায়োকন সংস্থা রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরকে চিঠি দিয়ে জানায়, রিলায়েন্সের প্রয়োজনীয় শংসাপত্র নেই। বায়োকনের চিঠি পেয়ে স্বাস্থ্য দফতর একটি কমিটি গড়ে। কমিটির তদন্তে রিলায়েন্স লাইফ সায়েন্স প্রাইভেট লিমিটেডকেই ‘ক্লিন চিট’ দেওয়া হয়। এর পর বায়োকন হাইকোর্টে মামলা করে।
গতকালের রায়ের পরে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সুদীপবাবুকে মন্ত্রিসভা থেকে সরানোর পর মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের হাতেই স্বাস্থ্য দফতর। একটি অংশের বক্তব্য, সুদীপ রায়বর্মন বরাত প্রক্রিয়া নিয়ে প্রতিবাদ করাতেই তাঁকে মন্ত্রিপদ খোয়াতে হয়। যদিও সুদীপবাবু বলেন, ‘‘আমি ৩১ মে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পরার পর জুলাই মাসে এই বরাত দেওয়া হয়। এর থেকে বেশি কিছু বলব না।’’