প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলের এক কলেজ গেটের বাইরে সকাল সকালই মিলল একটি গ্রেনেড। শুধু তা-ই নয়, তার সঙ্গে রাখা ছিল হাতে লেখা একটি নোটও। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যে কলেজের সামনে গ্রেনেড পাওয়া গিয়েছে, সেটি রাজভবনের থেকে মাত্র ২০০ মিটার দূরে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল ৬টায় ইম্ফলের ঘনাপ্রিয়া মহিলা কলেজের গেটের কাছে একটি গ্রেনেড পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়েরা। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। বম্ব স্কোয়াডও আসে। তার পর গ্রেনেডটিকে নিষ্ক্রিয় করেন বম্ব স্কোয়াডের কর্মীরা। সেই গ্রেনেডের সঙ্গে পাওয়া কাগজে লেখা ছিল, ‘‘ফ্যাসিবাদী শিক্ষাব্যবস্থার বর্জন করুন। সর্বহারা পড়ুয়াদের বিনামূল্যে শিক্ষার দাবির আন্দোলনের অধিকারকে সম্মান করুন।’’
কে বা কারা রাতের অন্ধকারে কলেজ গেটের বাইরে গ্রেনেড রেখে গিয়েছিলেন তা এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। কেউ এখনও ঘটনার দায় স্বীকার করেননি। তবে অনেকে মনে করছেন, কলেজ কর্তৃপক্ষের থেকে ‘তোলা’ আদায় করতে ভয় দেখাতেই এমন কাণ্ড ঘটানো হয়েছে। উল্লেখ্য, বিগত কয়েক মাস ধরে মণিপুরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তোলাবাজির অভিযোগ প্রকাশ্যে আসছে। মণিপুরের বর্তমান পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কিছু স্বার্থসন্ধানী মানুষ এমন তোলা চেয়ে হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ।
২০২৩ সালের ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে মণিপুরে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে। মণিপুরের আদি বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জ়ো-সহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের (যাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান) সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত প্রায় দুশো জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘরছাড়ার সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকার একাধিক পদক্ষেপ করেছে। কিন্তু তাতেও অশান্তি রোখা যাচ্ছে না। প্রায়ই মণিপুরের কোনও না কোনও জায়গায় বিক্ষিপ্ত ভাবে অশান্তির ঘটনা ঘটছে।