ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
পুরসভার নিয়ম মেনে ‘সঠিক’ অ্যাম্বুল্যান্সে না আসায় রোগীকে ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল অমিত শাহের রাজ্য গুজরাতের এক কোভিড হাসপাতালের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, এর জেরে ‘বিনা চিকিৎসা’য় মৃত্যু হয়েছে গুজরাত সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি-র ন্যানোসায়েন্স বিভাগের ডিন ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায়ের। প্রবল শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে দিন দু’য়েক ধরে একের পর হাসপাতালের দোরে দোরে ঘোরাঘুরি করে লাভ হয়নি বলেও অভিযোগ তাঁর ঘনিষ্ঠদের। শেষমেশ রবিবার তাঁর মৃত্যু হয়।
ইন্দ্রাণীর সহকর্মী ও ছাত্রছাত্রীরা জানিয়েছেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় অধ্যাপিকার শ্বাসকষ্টের সমস্যা শুরু হয়। এক সময় তাঁর অক্সিজেন সম্পৃক্ততার মাত্রা ৯০-৯২ শতাংশে নেমে যায়। সঙ্গে সঙ্গে একটি গাড়িতে তাঁকে গাঁধীনগরে একটি কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে সেখানে তিলধারণের জায়গা না থাকায় তাঁকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য সহকর্মীদের অনুরোধ করেন ইন্দ্রাণী। এ বার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। তবে সেখানে বাইপ্যাপ অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর এবং ভেন্টিলেটর কম থাকায় ফের অন্য হাসপাতালের খোঁজ শুরু করেন সহকর্মীরা।
শনিবার ইন্দ্রাণীকে নিয়ে আমদাবাদ পুরসভার কোভিড হাসপাতালে পৌঁছন সকলে। তবে সেখান থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় ইন্দ্রাণীকে। অভিযোগ, পুরসভার নিয়ম মতো রোগীকে ‘এমআরআই-১০৮’ অ্যাম্বুল্যান্সে না আনার জন্য তাঁকে ভর্তি নেওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। নিরুপায় হয়ে ফের গাঁধীনগরের হাসপাতালেই নিয়ে যাওয়া হয় ইন্দ্রাণীকে। ততক্ষণে তাঁর অক্সিজেনের মাত্রা কমতে কমতে ৬০ শতাংশে গিয়ে ঠেকেছে। অবশেষে, রাত ২টো নাগাদ রোগীর জন্য একটি বাইপ্যাপ অক্সিজেন মেশিনের ব্যবস্থা করে হাসপাতাল। যদিও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইন্দ্রাণীর এক ঘনিষ্ঠ একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘‘গাঁধীনগরের হাসপাতালে সব রকমের চেষ্টাই করা হয়েছিল। তবে রাত ২টো নাগাদ বাইপ্যাপ এবং ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা করা হলেও ফুসফুসে সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় ততক্ষণে সব শেষ!’’
স্নায়ুবিজ্ঞানের-এর বিশেষজ্ঞ ইন্দ্রাণী ভাবা অ্যাটোমিক রিসার্চ সেন্টার-এর পোস্ট ডক্টরাল ফেলো ছিলেন। এ ছাড়া, বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও পড়াতেন তিনি।