ইয়েদুরাপ্পা (বাঁ দিকে) এবং বিজয়েন্দ্র। ছবি: সংগৃহীত।
দলিত নেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে, ভোক্কালিগা সমাজের ডিকে শিবকুমার এবং ওবিসি নেতা সিদ্দারামাইয়া। ছ’মাস আগে কংগ্রেসের এই ‘ত্রয়ী’ তছনছ করে দিয়েছেন দক্ষিণাত্যে বিজেপির একমাত্র ‘দুর্গ’। বাসবরাজ বোম্মাইয়ের সরকার বিধানসভা ভোটে পর্যুদস্ত হওয়ার পরেও কর্নাটকে চলছে পদ্ম-শিবিরে ভাঙন।
এই পরিস্থিতিতে লোকসভা ভোটের আগে ঘুরে দাঁড়াতে লিঙ্গায়েত জনগোষ্ঠীর অবিসংবাদিত নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পার উপরেই সম্ভবত ভরসা রাখতে চলেছেন বিজেপির শীর্ষনেতৃত্ব। শুক্রবার দলের রাজ্য সভাপতি হিসাবে ইয়েদুরাপ্পার ছেলে বিওয়াই বিজয়েন্দ্রের নাম ঘোষণা করে এই নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের দল এই বার্তাই দিতে চেয়েছেন বলে রাজনীতির কারবারিদের একাংশের ধারণা।
দুর্নীতি মামলায় নাম জড়ানোয় ২০১১-র অগস্টে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছিলেন কর্নাটক রাজনীতিতে ‘ইয়েড্ডি’ নামে এই নেতা। জেলেও যেতে হয়েছিল তাঁকে। এর পর বিজেপি ছেড়ে কর্নাটক জনতা পক্ষ নামে দল গড়ে ২০১৩-র ভোটে লড়তে নেমেছিলেন তিনি। ছ’টি আসনে জেতার পাশাপাশি লিঙ্গায়েত ভোটে থাবা বসিয়ে বিজেপির ভরাডুবি নিশ্চিত করেন। ২০১৪-র লোকসভা ভোটের আগে বিজেপিতে ফেরেন ইয়েড্ডি।
২০১৮-র বিধানসভা ভোটের পর কর্নাটকে কংগ্রেস-জেডি(এস) জোট সরকার গঠিত হয়েছিল। কিন্তু ২০১৯-এ বিধায়ক ভাঙিয়ে সেই সরকারের পতন ঘটিয়ে ফের মুখ্যমন্ত্রী হন তিনি। কিন্তু একাধিক দুর্নীতি মামলা এবং দলের অন্দরে বিদ্রোহের জেরে ২০২১-এর জুলাই মাসে ইয়েড্ডিকে সরিয়ে আর এক লিঙ্গায়েত নেতা বাসবরাজ বোম্মাইকে মুখ্যমন্ত্রী করে বিজেপি।
চলতি বছরের মে মাসে বিধানসভা ভোটে ইয়েড্ডিকে টিকিটও দেয়নি মোদী-শাহের দল। পরিবর্তে তাঁর আসন শিমোগা জেলার শিকারিপুরায় প্রার্থী করা হয় ছেলে বিজয়েন্দ্রকে (প্রসঙ্গত, শিমোগার বর্তমান সাংসদ ইয়েড্ডির আর এক ছেলে বিওয়াই রাঘবেন্দ্র)। কর্নাটক জুড়ে কংগ্রেস ‘হাওয়াতেও’ বিজয়েন্দ্র বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছিলেন। এ বার দল নতুন দায়িত্ব দিল তাঁকে। বিধানসভার টিকিট না-পেয়ে ইয়েড্ডি সক্রিয় রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। এ বার কি তাঁর মত পরিবর্তন হবে?