উদ্বোধনের কয়েক দিন আগে সংবাদিক সম্মেলন করেছিল সংশ্লিষ্ট সংস্থা। ছবি: টুইটার
২ কোটি টাকা খরচ করে সংস্কার করা হয়েছিল মোরবীর সেতুটি, উদ্বোধনের কয়েক দিন আগে সংবাদিক সম্মেলন করে এমনটাই দাবি করেছিল সংশ্লিষ্ট সংস্থা। তারা এ-ও জানিয়েছিল, যে ভাবে সেতুর সংস্কার করা হয়েছে, তাতে আরও পনেরো বছর সেতুটি বহাল তবিয়তে টিকে থাকবে। রবিবার রাতের বিপর্যয়ের পর তাদের সেই বক্তব্য প্রকাশ্যে এসেছে।
মোরবীর সেতুটি সংস্কারের দায়িত্বে ছিল ‘ওরেভা’ নামের একটি বেসরকারি সংস্থা। গত ২৪ অক্টোবর সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর দীপক পারেখ সাংবাদিক সম্মেলন করেছিলেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘‘যদি মানুষ সেতুটি যথাযথ ভাবে ব্যবহার করেন, যদি সেতুর উপর উৎপাত না করা হয়, যদি কেউ সেতুটি নষ্ট না করেন, তবে আরও পনেরো বছর সেতুটি টিকে থাকবে।’’ এই সেতু তাঁরা ১০০ শতাংশ সংস্কার করেছেন বলেও দাবি করেছিলেন তিনি। জানিয়েছিলেন, সংস্কারের জন্য ২ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে।
মোরবীতে মাচ্ছু নদীর উপর ঝুলন্ত সেতুটি প্রায় দেড়শো বছরের পুরনো। দীপক বলেছিলেন, ‘‘যখন সেতুটি তৈরি করা হয়েছিল, দেশে উচ্চমানের প্রযুক্তি ছিল না। ফলে শুধু কাঠের পাটাতন দিয়ে সেতুটি বানানো হয়েছিল।’’ তবে উন্নত মানের কাঁচামাল ব্যবহার করে সেতুর সংস্কার করা হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। সেতুটি যে দীর্ঘ দিন টিকবে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহই নেই, দাবি ছিল সংস্থার।
দীপক জানিয়েছিলেন, নতুন করে সংস্কার করা এই সেতুতে লোকের ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য নির্দিষ্ট প্রবেশমূল্য ধার্য করা হয়েছে। টিকিট কেটে সেতুতে ওঠার সুযোগ পাবেন মানুষ, সেই ব্যবস্থা করা হয়েছিল। টিকিটের দাম ১৭ টাকা।
দীর্ঘ ৭ মাস মোরবীর এই সেতু বন্ধ রাখা হয়েছিল। চলছিল সংস্কারের কাজ। সেতুটি নতুন করে খুলে দেওয়ার ছ'দিনের মাথায় এই বিপর্যয়। সঙ্কীর্ণ সেতুতে এক সঙ্গে প্রায় পাঁচশো মানুষ উঠেছিলেন বলে দাবি করা হয়েছে। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজও প্রকাশ্যে এসেছে। সংশ্লিষ্ট সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা প্রশাসনের সবুজ সঙ্কেত ছাড়াই সেতুটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করেছিল। সেতু সম্পর্কে কোনও তথ্যও প্রশাসনকে জানানো হয়নি বলেো অভিযোগ। সেতুটি নির্দিষ্ট সময়ের আগেই খুলে দেওয়া হয়েছিল, দাবি করেছেন কেউ কেউ।
কী ভাবে সেতুটি ভেঙে পড়ল, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ১৪১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আহত আরও অনেকে। রবিবার সারা রাত ধরে চলেছে উদ্ধারকার্য।