—ফাইল চিত্র।
কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবি থেকে একচুলও সরছেন না কৃষকরা। সোমবার ফের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে একদফা বৈঠকে রয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রের প্রস্তাব মেনে আইন প্রত্যাহারের বিকল্প রাস্তায় যেতে নারাজ তাঁরা। বরং অর্ডিন্যান্স বা অধ্যাদেশ জারি করে বিতর্কিত তিনটি আইন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে পাল্টা চাপ দিতে চলেছেন আন্দোলনকারী কৃষকরা। একই সঙ্গে ২০১৮-য় লোকসভায় উত্থাপিত ‘প্রাইভেট মেম্বার্স বিল’-এর প্রস্তাব তুলে ধরে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য সুনিশ্চিত করার দাবি জানিয়েও কেন্দ্রকে পাল্টা চাপে ফেলতে চলেছেন তাঁরা।
কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে এই মুহূর্তে নেতৃত্ব দিচ্ছে অল ইন্ডিয়ান কিসান সঙ্ঘর্ষ কো-অর্ডিনেশন কমিটি। অর্ডিন্যান্স এনে আইন প্রত্যাহারের ভাবনা তাদেরই মস্তিষ্কপ্রসূত বলে জানা গিয়েছে। সংগঠনের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, অর্ডিন্যান্স জারি করে আইন তিনটি প্রত্যাহার করা যেতেই পারে। তাতে সময়ও বেশি লাগবে না। বাড়বে না জটিলতাও। আইন প্রত্যাহারের দাবি থেকে সরে আসার কোনও প্রশ্ন নেই বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, সরকার সেই দাবি মেনে নিলে তবেই আলোচনা সফল হবে।
কেন্দ্রের সঙ্গে নতুন করে আলোচনা শুরু হওয়ার আগে, সোমবার সংগঠনের তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, ‘‘নরেন্দ্র মোদী সরকার যদি সত্যিই আগ্রহী হয়, সে ক্ষেত্রে এক-দু’দিনের মধ্যেই সব সমস্যার সমাধান সম্ভব। তবে এই সমস্যা সমাধানের পথে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবই সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা।’’ সরকার যে বিকল্প রাস্তার খোঁজ করছে, তাতে আলোচনা ব্যর্থ হতে বাধ্য বলেও সাফ জানিয়ে দেয় তারা।
আরও পড়ুন: স্টেন্ট নিয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা, মঙ্গলবার সৌরভকে দেখতে আসছেন দেবী শেঠি
ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের অধিকার সুনিশ্চিত করতে ২০১৮-র ‘প্রাইভেট মেম্বার্স বিল’-টিই এই মুহূর্তে নজরে কৃষকদের। এই অল ইন্ডিয়ান কিসান সঙ্ঘর্ষ কো-অর্ডিনেশন কমিটির নেতৃত্বেই ৫০০ কৃষক মিলে ওই বিলটির খসড়া তৈরি করেন। স্বাভিমানি পক্ষ দলের সদস্য কৃষক নেতা তথা লোকসভা সাংসদ রাজু শেট্টি সেটি সংসদে পেশ করেন। কংগ্রেস, শিবসেনা, সিপিআই (এম), বিএসপি, তৃণূল, ডিএমকে এবং এনসিপি-র মতো ২১টি দল বিলটিকে সমর্থন করলেও, বিলটি পাশ হয়নি।
আরও পড়ুন: কবে থেকে, কী ভাবে টিকা? নিতে পারবেন কারা? নানা প্রশ্নের উত্তর দিল স্বাস্থ্যমন্ত্রক
ওই বিলে মূলত দু’টি প্রস্তাব ছিল, ঋণের দায় থেকে কৃষকদের মুক্তির অধিকার এবং ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে প্রাপ্তির অধিকার। শেট্টির বক্তব্য, ‘‘বিলটিতে বলা রয়েছে, ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের চেয়ে কম দামে ফসল কেনা যাবে না। বড় ধরনের কোনও পরিবর্তন না ঘটিয়ে ওই বিলটিকে সহজেই সরকারি বিল হিসেবে গ্রহণ করতে পারে কেন্দ্র। ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের গ্যারান্টি ছাড়া চাইলে এদিক ওদিক কিছু সংশোধন করতেই পারে সরকার।’’ তাঁদের দাবি-দাওয়া না মানা হলে, প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে দলে দলে কৃষকদের নিয়ে রাজধানীর রাস্তায় নামবেন বলেও জানিয়ে দেন তিনি।