জলমগ্ন মুম্বই ছবি: টুইটার থেকে।
সাড়ে ৪ ঘণ্টায় ২৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টি। শুক্রবার সকালে ভেসেছে মুম্বইয়ের বিস্তীর্ণ এলাকা। মৌসম ভবনের সান্তাক্রুজ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র জানিয়েছে, এই মরসুমে এক দিনে এত বৃষ্টি এর আগে হয়নি। এক দিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের পরিসংখ্যানে গত ১০ বছরে এটি দ্বিতীয়। অথচ এত বৃষ্টি হতে পারে তার কোনও আগাম পূর্বাভাস না কি ছিল না আবহাওয়া অফিসের কাছে। তাই আগে থেকে কাউকে সতর্ক করা যায়নি। এই ঘটনায় হতভম্ব আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরাও।
রিডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক অক্ষয় দেওরা এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমরা বুঝতে পারছি না কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল। বৃহস্পতিবার থেকে র্যাডারে বোঝা যায়নি এত বৃষ্টি হতে পারে। আবহাওয়ার মডেলগুলিতে পূর্বাভাস ছিল না। বঙ্গোপসাগর বা আরব সাগরে কোনও নিম্নচাপ ছাড়াই এই বৃষ্টি হয়েছে। সাধারণত এই ধরনের ঘটনা ঘটে না।’’
উপগ্রহ চিত্র ও র্যাডার চিত্র থেকে পরিষ্কার, শুক্রবার ভোর ৫টা নাগাদ হঠাৎ মুম্বইয়ে বজ্রগর্ভ মেঘ সৃষ্টি হয়। খুব তাড়াতাড়ি আবহাওয়ার পরিবর্তন হয়েছে। তার ফলেই এই বৃষ্টিপাত। আইআইটি বম্বের বিশেষজ্ঞ শ্রীধর বালাসুব্রহ্মণ্যন বলেন, ‘‘জলীয় বাষ্প দ্রুত ঘনীভূত হয়ে মেঘ ভাঙা বৃষ্টি হতে পারে। গত সপ্তাহে এই ধরনের বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেটা চলতি সপ্তাহে কী ভাবে হল সেটাই বোঝা যাচ্ছে না।’’
মুম্বইয়ের আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী পাঁচ দিন ধরে সেখানে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। শুক্রবারের বৃষ্টি প্রসঙ্গে মুম্বইয়ের আবহাওয়া দফতরের প্রধান জয়ন্ত সরকার বলেন, ‘‘পূর্বাভাসের জন্য দুটি উপাদান গুরুত্বপূর্ণ। কতটা বৃষ্টি হচ্ছে ও কত বড় এলাকা জুড়ে বৃষ্টি হচ্ছে। আমরা এলাকা আগে থেকেই জানিয়েছিলাম। কিন্তু বৃষ্টিপাতের পরিমাণ জানাতে পারিনি। কারণ, ভোরে খুব তাড়াতাড়ি মেঘ তৈরি হয়েছিল।’’
এই প্রসঙ্গে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের মানব সম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্রের অধিকর্তা লক্ষ্মী নারায়ণ শতপথী বলেন, ‘‘অনেক সময় খুব অল্প সময়ের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে স্থানীয় বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হয়ে যেতে পারে। ফলে এই ধরনের মেঘ ভাঙা বৃষ্টি হয়। র্যাডারে না আসলে আগে থেকে বলা মুশকিল। ফলে খুব বেশি আগে থেকে এই ধরনের বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া না গেলেও কিছুক্ষণ আগে অন্তত তার পূর্বাভাস দেওয়া যেতে পারে। এখন আবহাওয়া দফতরের কাছে সেই ধরনের যন্ত্র ও প্রযুক্তি রয়েছে।’’