ভারতীয় ক্রিকেটে ওপেনার হিসেবে কেরিয়ার শুরুর সময় তাঁকে বলা হত ‘স্ট্রোকলেস ওয়ান্ডার’। হাতে শট ছিল না একেবারে। ফলে শুরুর টেস্ট কেরিয়ার জলে পড়েছিল। কিন্তু সেই নভজ্যোত সিংহ সিধুই পরবর্তীকালে ভোল বদলে ফিরে এসেছিলেন ‘বিগ হিটার’ হয়ে। সীমিত ওভারের ম্যাচে ওপেনার সিধু বিনাক্লেশে সমস্ত ধরনের বোলারকে মাঠের বাইরে ফেলেছেন।
রাজনীতিতে ইনিংস শুরু করেছিলেন বিজেপি দিয়ে। ২০০৪ সালে। সাংসদও হয়েছিলেন। প্রথমে লোকসভায় নির্বাচিত এবং পরে রাজ্যসভায় মনোনীত সাংসদ হিসেবে। সেখান থেকে যান অরবিন্দ কেজরীবালের ‘আপ’-এ। সেই ইনিংসও মাঝপথে ছেড়ে সিধুর গমন কংগ্রেসে। পঞ্জাবের কংগ্রেসে থাকাকালীনই মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিংহের সঙ্গে তাঁর মতানৈক্য শুরু। দু’পক্ষের তিক্ততা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, দিল্লিতে এসে গাঁধী পরিবারের কাছে নালিশ জানিয়েছিলেন সিধু। দেখা করেছিলেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর সঙ্গে। তার পরের খবর, সিধুকে পঞ্জাবের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি করা হচ্ছে। তবে তাঁর সঙ্গেই দুই কার্যনির্বাহী সভাপতিকে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে বলেও খবর। অর্থাৎ, প্রদেশ সভাপতি হিসেবে সিধু ‘একচ্ছত্র’ আধিপত্য এখনই থাকছে না। তাঁকে কাজ করতে হবে দুই সহকারীকে নিয়ে।
পক্ষান্তরে, মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দরকেও তাঁর মন্ত্রিসভা নতুন করে সাজাতে বলা হয়েছে। অন্তত দু’জন মন্ত্রীকে বরখাস্ত করার নির্দেশ তাঁকে দেওয়া হয়েছে বলেই খবর। আরও জনা তিনেক মন্ত্রীর দায়িত্ব রদবদলের কথাও বলা হয়েছে। সূত্রের দাবি, অমরিন্দর তা মেনে নিয়েছেন। আগামী বছর পঞ্জাবে বিধানসভা ভোট। কংগ্রেসকে সেখানে ক্ষমতা ধরে রাখতে হবে। কিন্তু দেশের অন্যান্য অনেক রাজ্যের মতোই পঞ্জাবেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দীর্ণ রাজ্য কংগ্রেস। গোষ্ঠীলড়াই অবশ্য কংগ্রেসের সহজাত। প্রতিষ্ঠার দিন থেকেই তা চলে আসছে। সেই ‘ঐতিহ্য’ ধরেই সিধু এবং ‘ক্যাপ্টেন’ অমরিন্দরের মধ্যে দ্বন্দ্ব। তবে শেষে দেখা গেল, শ্যাম এবং কূল— আপাতত উভয়ই রক্ষা করল কংগ্রেস হাইকম্যান্ড। সিধু রইলেন সংগঠনের মাথায়। সরকারের মাথায় অমরিন্দর।