গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। এই পাঁচ রাজ্য হল রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, তেলঙ্গানা এবং মিজ়োরাম। দিল্লির নির্বাচন সদনে সাংবাঠিক বৈঠক করে ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করলেন দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার। রাজ্যগুলির মধ্যে মিজ়োরাম বিধানসভার মেয়াদ শেষ হবে ১৭ ডিসেম্বর। বাকি রাজ্যগুলিতে বিধানসভার মেয়াদ শেষ হবে জানুয়ারিতে।
মধ্যপ্রদেশে এক দফায় ভোট হতে চলেছে ১৭ নভেম্বর। রাজস্থানের সব ক’টি বিধানসভায় ভোট হবে এক দফাতেই—২৩ নভেম্বর। তেলঙ্গানায় ভোট হবে ৩০ নভেম্বর। মিজ়োরামেও এক দফায় ভোটগ্রহণ হবে ৭ নভেম্বর। ভোটমুখী পাঁচ রাজ্যের মধ্যে কেবল ছত্তীসগঢ়েই হবে দু’দফায় ভোট। ৭ নভেম্বর এবং ১৭ নভেম্বর। সব রাজ্যের ভোটের ফলঘোষণা হবে ৩ ডিসেম্বর। ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে ভোটপ্রক্রিয়া। কংগ্রেস, বিজেপি-সহ প্রতিটি দলই পাঁচ রাজ্যের এই ভোটকে লোকসভা নির্বাচনের আগে সেমিফাইনাল ধরে নিয়ে এগোচ্ছে। ভোটের ফলাফল যা-ই হোক, তা লোকসভা ভোটের ফলকে প্রভাবিত করতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।
নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, পাঁচ রাজ্যের মোট ৬৭৯টি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। এ বার নতুন ভোটারের সংখ্যা ৬০ লক্ষ। মোট ভোটারের সংখ্যা ১৬.১ কোটি। কমিশনার জানিয়েছেন, পাঁচ রাজ্যেই নারী-পুরুষ লিঙ্গ অনুপাত ক্রমশ উন্নত হচ্ছে। পাঁচ রাজ্যের প্রতিটিতে ক’জন মহিলা প্রার্থী রয়েছেন, তা-ও উল্লেখ করা হয়েছে সাংবাদিক বৈঠকে। নির্বাচনী প্রস্তুতির অঙ্গ হিসাবে পাঁচটি রাজ্যে গিয়েই ভোট প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কমিশন। বেড়েছে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যাও। মিজ়োরামে থাকছে ১,২৭৬টি ভোটকেন্দ্র। ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান এবং তেলঙ্গানায় ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা যথাক্রমে ২৪,১০৯, ৬৪,৫২৩, ৫১,৭৫৬, ৩৫,৩৫৬।
২০১৮ সালে ছত্তীসগঢ়ে দুই দফায় এবং বাকি চার রাজ্যে এক দফায় ভোটগ্রহণ হয়েছিল। ৯০ বিধানসভা আসনের ছত্তীসগঢ়ে প্রথম দফার মাওবাদী উপদ্রুত ১৮টি আসনে নির্বাচন হয়েছিল ১২ নভেম্বর। আর দ্বিতীয় দফার ৭২টি আসনে নির্বাচন হয়েছিল ২০ নভেম্বর। মধ্যপ্রদেশ এবং মিজ়োরামে একই দিনে ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করেছিল কমিশন। ২৩০টি আসনের মধ্যপ্রদেশ বিধানসভার ভোট হয়েছিল ২৮ নভেম্বর। ওই দিন ৪০ আসনের মিজ়োরামেও ভোটগ্রহণ হয়েছিল। ২০১৮ সালে ২০০ বিধানসভা আসনের রাজস্থান এবং ১১৯ আসনের তেলঙ্গানার ভোটগ্রহণও হয়েছিল একই দিনে— ৭ ডিসেম্বর। পাঁচ রাজ্যেই ভোটগণনা হয়েছিল ১১ ডিসেম্বর।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বর্তমানে ছত্তীসগঢ় এবং রাজস্থানে কংগ্রেস ক্ষমতায় রয়েছে। ওই দুই রাজ্যেই বিজেপির সঙ্গে তাদের সরাসরি লড়াই। ২০১৮-র বিধানসভা ভোটে জিতে মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস ক্ষমতা দখল করলেও দেড় বছরের মাথাতেই জ্যোতিরাদিত্য শিন্ডের সাহায্যে দু’ডজন বিধায়ক ভাঙিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথের সরকারের পতন ঘটিয়েছিল বিজেপি। তেলঙ্গানায় ক্ষমতায় রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস)। সেখানে এ বার ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে কংগ্রেস এবং বিজেপির ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা। অন্য দিকে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য মিজ়োরামে মূল লড়াই ক্ষমতাসীন মিজ়ো ন্যাশনাল ফ্রন্ট (এমএনএফ)-এর সঙ্গে কংগ্রেসের।