— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
‘দুষ্প্রাপ্য পাথর’ বিক্রির টোপ দিয়ে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ছ’কোটি টাকা হাতিয়েছিলেন ছয় যুবক। অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করল ইডি।
দুষ্প্রাপ্য ওই পাথরটির নাম ‘ত্রথগোলা’। কাশ্মীরি ভাষায় ‘ত্রথ’ কথার অর্থ মেঘ ভাঙা বৃষ্টি, আর ‘গোলা’ হল যে কোনও ধরণের মূল্যবান পাথর কিংবা ধাতুর পিণ্ড। এই ত্রথগোলা মূলত তামা এবং ইরিডিয়ামের যৌগ। যদিও কাশ্মীরে এটি দুষ্প্রাপ্য পাথর বলেই পরিচিত। কাশ্মীরের বহু পুরাণ ও লোককথায় এই ত্রথগোলার উল্লেখ রয়েছে। প্রচলিত লোককথাগুলিতে দাবি করা হয়েছে, এই ত্রথগোলা মেঘ ভাঙা বৃষ্টি ডেকে আনতে পারে! পাথরটি হাতে নিলেই না কি বজ্রবিদ্যুৎ খেলে যায় আকাশে! অতীতেও ‘দুষ্প্রাপ্য’ বলে বিক্রি করে একাধিক মানুষকে ঠকিয়েছেন প্রতারকেরা। তবে এখন অনেকেই জানেন, ওই পাথর আদৌ দুষ্প্রাপ্য নয়, এর কোনও অলৌকিক শক্তিও নেই।
চলতি বছরে এমনই এক দল প্রতারকের ফাঁদে পা দেন জম্মুর এক ব্যবসায়ী। এমনকি, ত্রথগোলা কিনতে প্রায় ৬ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা খরচও করে ফেলেন! তবে তিনি যে প্রতারিত হয়েছেন, তা বুঝতে পারেন কয়েক দিন যেতে না যেতেই। এর পরেই ওই প্রতারকদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ব্যবসায়ী। অভিযোগের ভিত্তিতে ইডি-ও তদন্তে নামে। শেষমেশ গত ২৫ নভেম্বর ছয় যুবকের বিরুদ্ধে চার্জশিটও জমা দেয় ইডি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তদের নাম মহম্মদ ইকবাল বাকেরওয়াল, মুদ্দাসার আলি, আব্দুল জলিল, আখতার মীর, পারভেজ মীর এবং ইকবাল মীর। তদন্তে জানা গিয়েছে, ব্যবসায়ীকে ফাঁসাতে ২৯টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেছিলেন ছয় যুবক। টাকা হাতানোর পর যাতে কারও সন্দেহ না হয়, সে জন্য প্রতিটি অ্যাকাউন্টে অল্প অল্প পরিমাণে টাকা রাখা হয়েছিল। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দলের হাতে ধরা পড়েছেন সকলেই। তাঁদের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপ প্রতিরোধ আইন (পিএমএলএ) ২০০২-এর অধীনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনায় আরও কেউ যুক্ত ছিলেন কি না, জানতে এখনও চলছে তদন্ত।