ছবি: পিটিআই।
গত ২৫ নভেম্বর থেকে নিখোঁজ মণিপুর সেনাবাহিনীর এক ঠিকাদার। ঘটনাকে কেন্দ্র করে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে পশ্চিম ইম্ফল জেলায়। নিখোঁজ প্রৌঢ়কে খুঁজতে ইতিমধ্যেই ২০০০-এরও বেশি সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। নামানো হয়েছে ড্রোন, হেলিকপ্টারও। তল্লাশিতে সুবিধার জন্য প্রশিক্ষিত স্নিফার কুকুরও আনা হয়েছে।
নিখোঁজ সেনার নাম লাইশ্রাম কমল বাবু। কুকি-অধ্যুষিত কাংপোকপি জেলার লেইমাখং মিলিটারি স্টেশনে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৫৭ মাউন্টেন ডিভিশনের অধীনে মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস-এ ঠিকাদারের কাজ করতেন লাইশ্রাম। ৫৬ বছরের ওই প্রৌঢ় মণিপুরে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই সম্প্রদায়ের সদস্য। বাড়ি অসমের কাছাড় জেলায়। গত সপ্তাহে লাইশ্রামের পরিবার জানায়, তাঁর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। ফোনও বন্ধ। এর পরেই উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। পশ্চিম ইম্ফলের বিভিন্ন এলাকায় নতুন করে বিক্ষোভ শুরু হয়। লাইশ্রামকে খুঁজতে তল্লাশি অভিযান শুরু করে সেনা, পুলিশ এবং আধা-সামরিক বাহিনীর যৌথ দল। কিন্তু ৯ দিন কেটে গেলেও খোঁজ মেলেনি প্রৌঢ়ের।
গত মে মাস থেকে মেইতেই এবং কুকি-জো সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসা ঘিরে উত্তপ্ত মণিপুর। এ পর্যন্ত ২৫০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গৃহহীন হয়েছেন আরও বহু মানুষ। গত মাসেও মণিপুরের জিরিবামে কুকি জঙ্গি এবং সিআরপিএফ জওয়ানদের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়। অভিযোগ, সেই সময় একদল কুকি জঙ্গি মেইতেই সম্প্রদায়ের তিন মহিলা এবং তিন শিশুকে অপহরণ করে। দিন কয়েক পরে অপহৃত ছ’জনের দেহ নদীতে ভেসে আসে। প্রকাশ্যে আসে শিউরে ওঠার মতো ময়নাতদন্তের রিপোর্টও। জিরিবামের ওই ঘটনার পর নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায় মণিপুরে। বিচার চেয়ে এবং অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে ইম্ফলের রাস্তায় বিক্ষোভ শুরু হয়। রাজ্যের পাঁচ জেলায় জারি করা হয় কার্ফু। ইন্টারনেট পরিষেবার উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। তার মাঝেই আবার গত ১৬ নভেম্বর রাজ্যের বেশ কয়েক জন বিধায়কের বাড়িতে হামলা চালায় উত্তেজিত জনতা। হামলার চেষ্টা হয় মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের পৈতৃক ভিটেতেও। ওই ঘটনাতেও বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার পরেই নিখোঁজ হয়ে যান লাইশ্রাম। এখনও তাঁর খোঁজ চলছে।