(বাঁ দিক থেকে) মণীশ সিসৌদিয়া, কে কবিতা এবং অরবিন্দ কেজরীওয়াল। —ফাইল চিত্র।
দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়া ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস)-র নেত্রী কে কবিতার বিরুদ্ধে নতুন দাবি করল ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির বক্তব্য, দিল্লির আবগারি নীতিতে বিশেষ সুবিধা পেতে আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল এবং দিল্লির প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়ার সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিলেন কবিতা। সুবিধা পাওয়ার বিনিময়ে তিনি আপ নেতাদের ১০০ কোটি টাকা দিয়েছিলেন বলেও দাবি করেছে ইডি।
সোমবার একটি বিবৃতি দিয়ে ইডির তরফে বলা হয়, “কবিতা অরবিন্দ কেজরীওয়াল, মণীশ সিসৌদিয়া-সহ আপের অন্য শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন, যাতে দিল্লি আবগারি নীতি রূপায়ণে সুবিধা পাওয়া যায়।” সুবিধার বিনিময়ে তেলঙ্গানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের কন্যা কবিতা আপ নেতাদের ১০০ কোটি টাকা দেওয়ায় অভিযুক্ত বলেও দাবি করা হয়েছে বিবৃতিতে। আপ অবশ্য ইডির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে দাবি করেছে, লোকসভা ভোটের আগে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরীওয়ালের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই এই সব অভিযোগ করা হচ্ছে।
দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় শুক্রবার দুপুরে কবিতার হায়দরাবাদের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। চলে তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদ। তার পর বিকেলে বাড়ি থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়। ইডি সূত্রের খবর, বিকেল ৫টা ২০ মিনিট নাগাদ কবিতাকে গ্রেফতার করা হয়। বাজেয়াপ্ত করা হয় তাঁর পাঁচটা মোবাইলও। আগামী ২৩ মার্চ পর্যন্ত কবিতাকে ইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয় আদালত।
গত ডিসেম্বরে মণীশ সিসৌদিয়ার ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত অমিত আরোরা নামে এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। সূত্রের খবর, তখনই তারা জানতে পারে, এই মামলায় যুক্ত রয়েছেন কবিতা। কবিতাকে দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় গত বছর জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল ইডি। তবে সম্প্রতি তিনি ইডির তলব এড়িয়ে যান। এই মামলার চার্জশিটে ইডির অভিযোগ, দিল্লির তৎকালীন উপমুখ্যমন্ত্রী তথা মদ সংক্রান্ত নীতির ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী সিসৌদিয়া আবগারি নীতির পরিবর্তন ঘটিয়ে দক্ষিণ ভারতের যে ব্যবসায়িক সংস্থাকে সুবিধা পাইয়ে দিয়েছিলেন, কবিতা তার ৬৫ শতাংশের মালিক!
আবগারি মামলায় কেজরীওয়ালকে মোট ন’বার তলব করেছে ইডি। কিন্তু তার মধ্যে আট বারই হাজিরা এড়িয়েছেন তিনি। কবিতা ছাড়াও এই মামলায় এখনও পর্যন্ত আপের দুই প্রবীণ নেতা সিসৌদিয়া এবং আপের রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় সিংহ গ্রেফতার হয়ে তিহাড় জেলে গিয়েছেন। অভিযোগ ওঠে যে, দিল্লি সরকারের ২০২১-২২ সালের আবগারি নীতি বেশ কিছু মদ ব্যবসায়ীকে সুবিধা করে দিচ্ছিল। এই নীতি প্রণয়নের জন্য যাঁরা ঘুষ দিয়েছিলেন, তাঁদের সুবিধা করে দেওয়া হচ্ছিল। আপ সরকার সেই অভিযোগ মানেনি। সেই নীতি যদিও পরে খারিজ করা হয়।