বম্বে হাইকোর্ট। ছবি: সংগৃহীত।
বারান্দা থেকে পড়ে গিয়ে ‘অস্বাভাবিক’ মৃত্যু হয়েছিল পুণের ২৩ বছরের যুবতীর। গত ফেব্রুয়ারির এই ঘটনাটি আত্মহত্যা কি না, তা নিয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। ওই যুবতীর সঙ্গে এক পুরুষের তথাকথিত ‘সম্পর্ক’ও উঠে এসেছে আতসকাচের তলায়। তবে তদন্তের মাঝেই সেই ‘সম্পর্ক’ নিয়ে রীতিমতো হইচই শুরু হয়েছে একাধিক সংবাদমাধ্যমে। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানিতে তা নিয়েই সংবাদমাধ্যমকে সতর্ক করেছে বম্বে হাইকোর্ট। শুক্রবার হাইকোর্টের সেই বার্তা প্রকাশ্যে এসেছে। সংবাদমাধ্যমকে হাইকোর্টের নির্দেশ, ‘‘পুণের ওই ঘটনা নিয়ে অযথা প্রচার করবেন না।’’ আসল সত্য সামনে আসার আগেই সংবাদমাধ্যমের দ্বারা বিচারের প্রবণতার বিরুদ্ধেও কড়া বার্তা দিয়েছে হাইকোর্ট।
পুণের ওই যুবতীর মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে খবরের কাগজ থেকে টেলিভিশনের পর্দা— একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য নিয়ে একাধিক খবর পরিবেশিত হতে থাকে। এর পরই তা বন্ধ করার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হন ওই যুবতীর বাবা। হাইকোর্টের বিচারপতি এস এস শিন্দে এবং বিচারপতি মণীশ পিটালের ডিভিশন বেঞ্চে বৃহস্পতিবার তার শুনানি হয়। আদালতে ওই যুবতীর বাবার পক্ষে আইনজীবী শিরীষ গুপ্তের দাবি, ‘‘৮ ফেব্রুয়ারি ওই যুবতী নিজের ফ্ল্যাট থেকে পড়ে গিয়েছিলেন। আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।’’ তবে ওই ঘটনার পরই বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে ওই যুবতীর সঙ্গে এক জন পুরুষের ‘অবৈধ’ সম্পর্ক নিয়ে রসালো কাহিনি দেখানো হতে থাকে। এমনকি, ওই পুরুষের সঙ্গে যুবতীর কথোপকথন বলে ১২টি ‘অডিয়ো ক্লিপ’-ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এবং রাজনৈতিক দলগুলি ছড়াতে থাকে। আবেদনকারীর মতে, সংবাদমাধ্যমে এ সংক্রান্ত সমস্ত রিপোর্টই অসম্মানজনক এবং অবমাননাকর।
শুনানির সময় অভিনেতা সুশান্ত সিংহ রাজপুতের অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলারও উল্লেখ করেন যুবতীর বাবার আইনজীবী। সে সময়ও স্পর্শকাতর মামলায় ‘মিডিয়া ট্রায়াল’ বা আদালতের রায় বার হওয়ার আগেই নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করার বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমের জন্য নির্দেশিকা জারি করেছিল হাইকোর্ট। আবেদনকারীর দাবি, এই মামলার ক্ষেত্রে ওই নির্দেশিকা অমান্য করা হয়েছে। আদালত জানিয়েছে, এই মামলায় অকারণে প্রচার করা থেকে বিরত থাকতে হবে সংবাদমাধ্যমকে। পাশাপাশি, আগামী ৩১ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে বলেও জানিয়েছে আদালত।