কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের বিরুদ্ধে ফের দুর্নীতির অভিযোগ। ছবি: সংগৃহীত।
কেরল বিধানসভা ভোটের মাসখানেক আগেই ফের দুর্নীতির অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের বিরুদ্ধে। অভিযোগ,বিদেশি মুদ্রা পাচারে জড়িত কেরলের মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার বিজয়নের বিরুদ্ধে আদালতে এমনটাই চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন আবগারি দফতরের কমিশনার সুমিত কুমার। সোনাপাচার-কাণ্ডে প্রধান অভিযুক্ত স্বপ্না সুরেশের গোপন জবানবব্দির ভিত্তিতে কেরল হাইকোর্টে নিজের বিবৃতি দাখিল করেন সুমিত।
শুক্রবার সুমিত জানিয়েছেন, এর্নাকুলমের একটি আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নিজের বয়ানে স্বপ্না বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধেই রাজ্যে বিদেশি মুদ্রাপাচার করা হয়েছে। সুমিতের দাবি, নিজের জবানবন্দিতে বিজয়ন ছাড়াও স্পিকার শ্রীরামকৃষ্ণণ-সহ কেরল ক্যাবিনেটের ৩ মন্ত্রীর বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে বিদেশি মুদ্রা লেনদেনে জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছেন স্বপ্না।
বিজয়ন-ঘনিষ্ঠ স্বপ্নার বয়ানে উঠে এসেছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির আগের কনসাল জেনারেলের নামও।
আগামী ৬ এপ্রিল কেরলে বিধানসভা ভোট। তবে ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার বহু আগেই বিজয়ন-সহ রাজ্যের শীর্ষ আমলা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে সোনাপাচারে জড়িত থাকার অভিযোগ করেছেন বিরোধী নেতৃত্ব। যদিও পাচার-কাণ্ডে তাঁকে জড়ানো যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, সে দাবি করেছেন বিজয়ন। এ নিয়ে গত ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে চিঠিও লিখেছেন তিনি। পাচার-দুর্নীতির রেশ কাটতে না কাটতেই ফের নতুন করে আরও একটি অভিযোগের তির উঠল বিজয়নের বিরুদ্ধে।
কেরল হাইকোর্টের কাছে নিজের বিবৃতিতে স্বপ্নার সঙ্গে বিজয়ন এবং তাঁর প্রাক্তন মুখ্যসচিব এম শিবশঙ্করের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের বিষয়টিও তুলে ধরেছেন সুমিত। প্রসঙ্গত, সোনাপাচার-কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে জামিনে মুক্ত শিবশঙ্করকে ইতিমধ্যেই সাসপেন্ড করেছে কেরল সরকার।
আদালতের কাছে সুমিতের দাবি, শিবশঙ্করই কনসাল জেনারেল এবং কেরলের হেভিওয়েট রাজনীতিকদের মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারী হিসাবে কাজ করতেন। নিজের জবানবন্দিতে এ কথাও উল্লেখ করেছেন স্বপ্না। সুমিতের আরও দাবি, আরবি ভাষায় দক্ষ স্বপ্নাকে জোর করে বিদেশি মুদ্রা পাচারের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্বপ্না। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের আড়ালে ওই লেনদেন চলত বলেও দাবি করা হয়েছে।
গত বছরের ৫ জুলাই কেরলের একটি বিমানবন্দর থেকে ৩০ কিলোগ্রাম সোনা বাজেয়াপ্ত করেন আবগারি দফতরের আধিকারিকেরা। ওই ঘটনার তদন্তে নেমেছে আবগারি দফতর, ইডি, এনআইএ-সহ দেশের ৫টি তদন্তকারী সংস্থা। তদন্তকারীদের দাবি, প্রায় ১৫ কোটি টাকা অর্থমূল্যের ওই সোনা তিরুঅনন্তরপুরম জেলায় আমিরশাহির কনসাল জেনারেলের ঠিকানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ওই অফিসেই ৭ মাস আগে কাজ করতেন স্বপ্না। পাচার-কাণ্ডে প্রধান অভিযুক্ত হিসাবে স্বপ্নাকে গ্রেফতার করার পরই উঠে আসে কেরলে একাধিক আমলা-মন্ত্রীর নাম। এ বার ওই অভিযুক্তেরই অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নের বিরুদ্ধে।