ডেরা বদলালেও জেলা বদলাল না জ়িনত। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
ফের ঠিকানা বদলাল বাঘিনি জ়িনত। রেডিয়ো কলার ‘ট্র্যাক’ করে জানা গিয়েছে, এখন বাঘিনি পুরুলিয়া জেলারই মানবাজার ২ ব্লকের শুশুনিয়া-বুরুডি এলাকায় ঢুকে পড়েছে। সেখানে রয়েছে আকাশমণি গাছের জঙ্গল। আর জঙ্গলের পাশেই রয়েছে জনবসতি। মানবাজার এলাকায় জনবসতি বাঘিনির আগের ডেরা রাইকা পাহাড়ের তুলনায় অনেকটাই বেশি। তাই চিন্তিত বন দফতরও।
তবে বাঘিনি যে হেতু পাহাড়ি এলাকা থেকে জঙ্গল এলাকায় ঢুকে পড়েছে, তাই তাকে ট্র্যাঙ্কুলাইজ করার চেষ্টা করছে বন দফতর। ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে বাঘিনিকে খাঁচাবন্দি করার কাজে দক্ষ যে সব দল ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে, তাদের ওই এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই প্রসঙ্গে কংসাবতী দক্ষিণের বিভাগীয় বন আধিকারিক (ডিএফও) পূরবী মাহাতো বলেন, “বাঘিনিকে ধরার চেষ্টা হচ্ছে। ওই এলাকায় বন দফতরের কর্মীরা পৌঁছে গিয়েছেন।”
পুরুলিয়ার বান্দোয়ানে রাইকা পাহাড় থেকে বুধবারই নিজের আস্তানা বদলে পাশের ভাঁড়ারি পাহাড়ের জঙ্গলে ঘাঁটি গাড়ে ওড়িশা থেকে আসা জ়িনত। তার পর আরও ১৫ কিমি পথ পাড়ি দিয়ে সে পৌঁছে যায় মানবাজারে। এত দিন ধরে জ়িনতকে বাগে আনতে জায়গায় জায়গায় খাঁচা বসিয়ে টোপ ফেলে রেখেছিলেন বনকর্মীরা। কিন্তু একটি টোপও গেলেনি বাঘিনি। খাঁচার আশপাশ ঘুরে সেখান থেকে চলে গিয়েছে সে। তাই এ বার হুলা পার্টি ডেকে বাঘিনিকে ধরতে চাইছে বন দফতর।
গত ১৫ নভেম্বর মহারাষ্ট্রের তাডোবা-আন্ধারি ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে তিন বছরের জ়িনতকে ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পে (টাইগার রিজ়ার্ভ, সংক্ষেপে বা এসটিআর) আনা হয়েছিল। কয়েক দিন ঘেরাটোপে রেখে পর্যবেক্ষণের পরে রেডিয়ো কলার পরিয়ে ২৪ নভেম্বর তাকে সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে ছাড়া হয়েছিল। তার পরেই ঝাড়খণ্ডের দিকে হাঁটা দেয় জ়িনত। কয়েক দিন ঝাড়খণ্ডে ঘুরে চাকুলিয়া রেঞ্জের রাজাবাসার জঙ্গল পেরিয়ে চিয়াবাঁন্ধি এলাকা থেকে ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি থানার অন্তর্গত কাটুচুয়া জঙ্গলে ঢুকে পড়ে সে। তার পর ঝাড়গ্রাম থেকে বাঘিনি ঢুকে পড়ে পুরুলিয়ায়।