ধর্ষিতার পরিবারের সদস্যদের নাম প্রকাশ্যে এনে ফেলল ত্রিপুরা সিপিএম।
ধর্ষিতার স্বামীর নাম, ঠিকানা প্রকাশ করে দিয়ে বিপাকে পড়েছে ত্রিপুরা সিপিএম। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন। বিজেপিও বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভাবছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আগরতলা শহরে এক মহিলাকে অটোতে তুলে নিয়ে গিয়ে পরে একটি গাড়িতে তুলে ধর্ষণ করে জনা দশেক যুবক। সেই ঘটনায় শহর জুড়ে গতকাল আলোড়ন সৃষ্টি হয়। পুলিশ গতকালই অভিযুক্ত চার জনকে গ্রেফতার করে। আজ আরও দু’জনকে গ্রেফতার করার পাশাপাশি সেই অটো ও গাড়িটি আটক করা হয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশের দুই এএসআইকেও সাসপেন্ড করা হয়েছে।
স্বাভাবিক ভাবেই বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। এর মধ্যেই গতকাল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা মানিক সরকার হাসপাতালে গিয়ে মহিলার সঙ্গে কথা বলেন। আর তার পরেই সিপিএম এক বিবৃতিতে ঘটনার নিন্দা করতে গিয়ে মহিলার স্বামীর নাম, তাঁদের ঠিকানা প্রকাশ করে দেয়। সিপিএমের অভিযোগ ছিল, বিজেপির এক বিধায়কের ইঙ্গিতেই পুলিশ প্রথমে এফআইআর নিতে রাজি হয়নি।
কালকে খানিকটা কোণঠাসা থাকলেও শাসক বিজেপি আজ তেড়েফুঁড়েই নেমেছে। বিজেপির বিভিন্ন সংগঠন আজ ময়দানে নেমেছে। মহিলা মোর্চার প্রতিনিধিরা এ দিন হাসপাতালে গিয়ে ওই মহিলার সঙ্গে দেখা করে খোঁজখবর নেন। হাসপাতালে যান পশ্চিম ত্রিপুরার সাংসদ প্রতিমা ভৌমিক আইনমন্ত্রী রতনলাল নাথও। দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিতে এডিজি রাজীব সিংহের সঙ্গে বৈঠক করে মহিলা মোর্চার নেত্রীরা। মোর্চা নেত্রী পাপিয়া দত্ত জানান, এই ঘটনায় কাউকেই ছাড়া হবে না। পাশাপাশি সিপিএমের নিন্দায় সরব হয়েছেন তাঁরা। বিজেপি মুখপাত্র নব্যেন্দু ভট্টাচার্য জানান, পুলিশের তরফে কোনও গাফিলতি থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবে সরকার। মহিলার পরিচয় প্রকাশ্যে নিয়ে আসায় সিপিএমকেও আক্রমণ করেন তিনি।
বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে, এ সব ক্ষেত্রে ধর্ষিতার কোনও রকম পরিচয় জানানো বা দেখানো যাবে না। তাঁরা বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানানো হয়েছে। অন্য দিকে, রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন বর্ণালী গোস্বামী জানান, সিপিএমের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে কমিশন। সিপিমের বিবৃতিতে ধর্ষিতার পরিচয় ফাঁস করার ঘটনাকে ঘৃণ্যতম কাজ বলে তিনি জানান।
এ দিকে, ধৃত ছ’জনের মধ্যে দু’জনের বয়স ১৮ বছরের কম হওয়ায় তাদেরকে জুভেনাইল কোর্টে পাঠানো হয়েছে বলে জানান সরকারী আইনজীবী বিদ্যুৎ সূত্রধর। বাকি চার জনকে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর টিআই প্যারেডে হাজির করা হবে। অভিযোগ নিতে গা-ছাড়া মনোভাব নেওয়ায় দুই এএসআইকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাঁদের এক জন মহিলা।