—প্রতীকী ছবি।
রক্ষকই ভক্ষক?— দিল্লির সরকারি কর্তা প্রেমোদয় খাখার বন্ধু-কন্যাকে ধর্ষণের ঘটনায় এই প্রশ্নই ঘুরছে জনমানসে। বিশেষ করে যখন অভিযুক্ত নিজেই দিল্লির মহিলা ও শিশু দফতরের সহ-অধিকর্তা হিসেবে প্রায় ২৫ বছর কর্মরত ছিলেন। পকসো আইন সংক্রান্ত প্রশিক্ষণও রয়েছে তাঁর। মহিলা, শিশু ও পিছিয়ে পড়া মানুষের কল্যাণে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। সমাজমাধ্যমে তাঁর প্রোফাইলে লেখা— ‘মানবিকতা রক্ষার্থে সম্পর্ক তৈরিতে বিশ্বাসী।’
অথচ নির্যাতিতা কিশোরীটি তাঁকে মামা বলে ডেকেছিল।
মঙ্গলবার পুলিশ জানিয়েছে, প্রতিবার নির্যাতনের আগে ওই কিশোরীকে মাদক খাওয়ানো হত। মেয়েটি সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে নির্যাতন চালাত প্রেমোদয়। কিশোরী জানিয়েছে, এক বার জ্ঞান ফেরার পরে সে দেখেছিল তার সারা দেহে অজস্র ক্ষতচিহ্ন। অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত খাখাদের বাড়িতে ছিল মেয়েটি। ওই সময়কালে মাসে অন্তত এক বার নির্যাতন করা হত তাকে, জানিয়েছে সে। ফেব্রুয়ারি মাসের পরে সে নিজের বাড়ি ফিরে যায়। তবে, নির্যাতনের আতঙ্ক ও মানসিক আঘাত পিছু ছাড়েনি তার। তার তীব্র প্যানিক অ্যাটাকের চিকিৎসার পরিসরেই অবশেষে ফাঁস হয় প্রেমোদয়ের কুকীর্তির কথা। নিজের মনোবিদকে সব খুলে বলেছিল মেয়েটি।
ওই কিশোরী প্রেমোদয়ের বন্ধুকন্যা। বন্ধুর মৃত্যুর পরে স্থানীয় অভিভাবক হিসেবে নিজের কাছে মেয়েটিকে এনে রাখেন মহিলা ও শিশু দফতরের এই প্রাক্তন কর্তা। তার পরে তার উপর চালান নির্যাতন, অভিযোগ উঠেছে এমনই। প্রেমোদয়ের স্ত্রী সীমা রানির বিরুদ্ধে গর্ভপাতের ওষুধ এনে খাওয়ানোর অভিযোগও করেছে ওই কিশোরী। সেই অভিযোগের পরেই সোমবার প্রেমোদয় খাখাকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় সীমাকেও।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ সম্পূর্ণ ভুয়ো দাবি করে বিন্দুমাত্র সহযোগিতা করছেন না খাখা দম্পতি। এ দিকে, তাঁদের গ্রেফতারির ঠিক আগেই বাড়ি থেকে পালিয়ে এক আইনজীবীর কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন তাঁরা। সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে সেই দৃশ্য।
এই ঘটনায় কেজরীওয়াল সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়েছে বিজেপি। রাজনীতিকদের মতে, কেন্দ্রের সঙ্গে আপের টানাপড়েনে বেশ প্রভাব ফেলবে এই ঘটনা।