কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে খুনের কিনারা। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বেওয়ারিশ দেহ পড়ে রয়েছে উড়ালপুলের নীচে, রাস্তার পাশে। খবর পেয়েই ছুটে গিয়েছিল পুলিশ। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। তাতে জানা যায়, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে ওই ব্যক্তিকে। কিন্তু হাজার চেষ্টা করেও খুনের কিনারা করতে পারছিলেন না তদন্তকারীরা। শেষমেশ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)-র সাহায্য নেয় পুলিশ। এআই ব্যবহার করে ‘বাঁচিয়ে’ তোলা হয় মৃতকে। আর তাতেই সাফল্য। অপ্রত্যাশিত ভাবে দ্রুত সমাধান হয়ে গেল জটিল মামলার।
একুশ শতকে যে কয়েকটি বিষয় প্রযুক্তি জগতে বিপ্লব এনেছে, তার মধ্যে অন্যতম এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। এআই দিয়ে করা যায় না, এমন কাজের তালিকা ক্রমশই ছোট হচ্ছে। দিল্লির এই হত্যা-রহস্যের ক্ষেত্রে কার্যত অসাধ্য সাধন করেছে এআই।
গত ১০ জানুয়ারি গীতা কলোনি উড়ালপুলের নীচের রাস্তা থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। কী ভাবে ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে তা জানা যায় ময়নাতদন্তে। কিন্তু, কিছুতেই মৃতের পরিচয় জানা যাচ্ছিল না। মৃতদেহের মুখটি এমন ভাবে বিকৃত হয়ে গিয়েছিল যে চেনার উপায় ছিল না তাঁকে। ফলে খুনি অবধি পৌঁছনো এক প্রকার অসম্ভব হয়ে পড়ছিল।
এক সপ্তাহের বেশি তদন্ত চালিয়েও যখন বিশেষ লাভ হচ্ছে না, তখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য নেয় পুলিশ। এআই ব্যবহার করে মৃত যুবকের ছবি পুনর্নির্মাণ করা হয়। এমন ভাবে ছবিটি বানানো হয় যা দেখলে মনে হবে, যমুনার পাড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন যুবক। তার পর সেই ছবি দিয়ে ৫০০টি পোস্টার ছাপিয়ে শহরের বিভিন্ন এলাকায় লাগিয়ে দেওয়া হয়। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ মারফতও ছড়িয়ে দেওয়া হয় ছবিটি।
এর ক’দিন পরেই এক ব্যক্তির ফোন আসে পুলিশের কাছে। তিনি জানান, পোস্টারের ওই যুবক তাঁর দাদা হিতেন্দ্র। এর পর নতুন করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। জানা যায়, হিতেন্দ্রর সঙ্গে তিন যুবকের ঝামেলা বেধেছিল। কথা কাটাকাটির মধ্যেই শ্বাসরোধ করে হিতেন্দ্রকে খুন করে তিন জন। মৃতদেহের মুখ বিকৃত করতে সাহায্য করেন এক মহিলা। ইতিমধ্যে ওই মহিলা সহ তিন জনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে।