পিঙ্ক ছবিতে বৃদ্ধ আইনজীবী অমিতাভের মুখেও শোনা গিয়েছিল এই প্রশ্নের কথা। ফাইল চিত্র।
আইনজীবী দীপক সহগলের ভূমিকায় ঠিক এই কথাটাই বলেছিলেন অমিতাভ বচ্চন। সুজিত সরকারের ‘পিঙ্ক’ ছবিতে। জানিয়েছিলেন, তাঁর মক্কেল মিনাল অরোরা (তাপসী পান্নু) যদি সে দিন যৌন উৎপীড়নে উদ্যত যুবককে খুন না করতেন, তা হলে নিশ্চিত ভাবেই ধর্ষণের শিকার হতে হত তাঁকে। আর তার পরেই উঠে আসত অমোঘ সেই প্রশ্ন— কেন ওই যুবকদের সঙ্গ দিয়েছিলেন?
মঙ্গলবার বিকেলে যেন সেই প্রশ্নের সপাট জবাব দিল দিল্লি হাই কোর্ট। বিচারপতি অনুপ জয়রাম ভম্বানি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন, কোনও মহিলা সঙ্গ দিতে রাজি মানেই যৌন সম্পর্কেও রাজি, এমনটা নয় কখনওই! এমনকি, ওই মহিলা কত ক্ষণ বা কত দিন ওই যুবকের সঙ্গে রয়েছেন, তা-ও যৌন সম্পর্ক স্থাপনের পূর্বশর্ত হতে পারে না বলে জানিয়েছেন বিচারপতি।
চেক প্রজাতন্ত্রের এক মহিলার সঙ্গে জোর করে যৌন সম্পর্ক স্থাপনে অভিযুক্ত সঞ্জয় মালিক ওরফে সন্ত সেবক দাসের আইনজীবী জামিনের আবেদন জানিয়ে বলেছিলেন, ওই মহিলা দীর্ঘ দিন ধরে সঙ্গ দিয়েছেন তাঁর মক্কেলকে। বিচারপতি জয়রাম জামিনের আবেদন খারিজ করে বলেন, ‘‘এক জন মহিলা যদি কোনও পুরুষের সঙ্গে থাকতে সম্মত হন, তা যত দিনের জন্য হোক না কেন, এই অনুমান করা যেতে পারে না যে তিনি সেই পুরুষের সাথে যৌন সম্পর্কে সম্মত ছিলেন।’’
মহিলাদের উপর যৌন নির্যাতনের অনেক মামলার শুনানিতেই অতীতে উঠে এসেছে নির্যাতিতা কী ভাবে তাঁর আচরণের মাধ্যমে সেই অন্যায়কে ডেকে এনেছেন, সে প্রসঙ্গ। পিঙ্কের অনেক আগে প্রয়াত তপন সিংহের আদালত ও একটি মেয়ে ছবিতেও উঠে এসেছিল সে কথা। মঙ্গলবার দিল্লি হাই কোর্টের রায় সেই ‘কুযুক্তির ধারাবাহিকতায়’ কার্যত ইতি টেনে দিল বলে মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।