কর্মী-সমর্থকদের পাশে থাকার বার্তা দিলেন নওশাদ সিদ্দিকি। — ফাইল ছবি।
আদালতের নির্দেশে বারুইপুর সংশোধনাগার থেকে ছাড়া পান ৮১ জন ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)-এর কর্মী সমর্থক। তাঁদের বাড়ি নিয়ে যেতে নিজেই সংশোধনাগারের সামনে হাজির হলেন আইএসএফ নেতা তথা বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। দিলেন পাশে থাকার বার্তা। এই কারণে মঙ্গলবার বারুইপুর আদালত চত্বরে ছিল কড়া নিরাপত্তা।
কলকাতার ধর্মতলায় বিক্ষোভ দেখিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন নওশাদ এবং তাঁর সমর্থকেরা। ওই দিন ভাঙড়েও বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন আইএসএফ নেতা-কর্মীরা বলে অভিযোগ। তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছিল। সেই কর্মী-সমর্থকেরাই মঙ্গলবার ছাড়া পেলেন। তাঁদের নিতে আসেন নওশাদ। দিন কয়েক আগে তিনি নিজেও জেল থেকে ছাড়া পান। তাঁকে সম্বর্ধনা জানিয়ে ফুরফুরা শরিফ পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিলেন কর্মী সমর্থকেরা। এ বার তাঁর পালা।
সংশোধনাগার থেকে ছাড়া পেয়ে কর্মী-সমর্থকদের অনেকেই বিধায়ককে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাদের সান্ত্বনা দিয়ে নওশাদ বলেন, ‘‘বিনা দোষে জেল খাটতে হয়েছে। বাংলা দেখছে, জনগণ দেখছে কী ভাবে বিনা দোষে তাঁদের জেল খাটতে হয়েছে। আগামী দিনে গণতান্ত্রিক ভাবে এর প্রত্যুত্তর দেওয়া হবে। গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করতে আরও বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে। এই কর্মী-সমর্থকেরা সেই দায়িত্ব তুলে দিয়েছেন। গণতন্ত্র রক্ষার জন্য লড়াই করে যাব।’’ তিনি এও জানিয়েছেন, যেখানে প্রয়োজন পড়বে, গণতন্ত্র রক্ষার জন্য তিনি ছুটে যাবেন।
ভাঙড়ে তৃণমূলের অবজার্ভার হয়েছেন শওকত মোল্লা। সেই নিয়ে খোঁচা দিতে ছাড়েননি নওশাদ। তিনি বলেন, ‘‘আরাবুলের সঙ্গে দল অন্যায় করেছে। ভাঙড়ে তিনিই তৃণমূলকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।’’ পাশাপাশি নওশাদ এও জানিয়েছে, আপাতত উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার কারণে কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি নিচ্ছে না তাঁর দল। তবে কেউ ভাঙড়কে অশান্ত করতে চাইলে সহজে ছেড়ে দেবেন না।
সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর দাবিও তুলেছেন নওশাদ। এই বিষয়ে তারা আইনি পদক্ষেপ নিতে পারেন বলে ইঙ্গিত দেন। আসন্ন নির্বাচনে জোট নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘রাজনৈতিক নেতাদের জোটের কথা বলতে হবে না। মানুষ অত্যাচার যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে নিজেরাই বাঁচার রাস্তা খুঁজে নেবে। সাগরদিঘি সেই পথ দেখিয়েছে।’’ নিয়োগ দুর্নীতি নিয়েও তিনি মন্তব্য করেন। তাঁর কথায়, ‘‘যারা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দেওয়া দরকার। কারণ মানুষ ভরসা করে তাঁদের পাঠিয়েছে। তাই বেশি শাস্তি দেওয়া দরকার।’’
এদিকে, শওকতকে ঘিরে নওশাদের পাড়ায় চোর চোর স্লোগান উঠেছিল। অভিযোগ, ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক শওকর গভীর রাতে ফোন করে হুমকি দেন পিরজাদা সাফেরি সিদ্দিকিকে। এই নিয়ে মঙ্গলবার জাঙ্গিপাড়া থানায় শওকতের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন সাফেরি।