বায়ুদূষণের মাপকাঠিতে ভারতের ৬০ শতাংশ শহরই ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’ (হু)-র বেঁধে দেওয়া বায়ুদূষণের মাপকাঠি মেনে চলতে ব্যর্থ হয়েছে। ফাইল চিত্র।
বায়ুদূষণের ক্ষেত্রে গত এক বছরে সামান্য ভাল হয়েছে ভারতের অবস্থান। আন্তর্জাতিক বায়ুদূষণ সমীক্ষক সংস্থা আইকিউ এয়ারের বার্ষিক রিপোর্ট জানাচ্ছে, গত বছর পঞ্চম স্থানে থাকা ভারত এ বার অষ্টম স্থানে নেমে এসেছে। ওই রিপোর্ট জানাচ্ছে, ওই রিপোর্ট জানাচ্ছে, বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত ৫০টি শহরের মধ্যে ৩৯টিই ভারতের।
বিশ্বের ১৩১টি দেশের বায়ুর গুণমান সূচক পরীক্ষা করে ওই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে আইকিউ এয়ার, তাতে বলা হয়েছে, বায়ুদূষণের নিরিখে বিশ্বের প্রথম স্থানে রয়েছে আফ্রিকার চাদ। পরে চারটি স্থানে এশিয়ার ইরাক, পাকিস্তান, বাহরাইন এবং বাংলাদেশ।
আইকিউ এয়ারের দাবি, ১১৮টি দেশ ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’ (হু)-র বেঁধে দেওয়া বায়ুদূষণের মাপকাঠি (প্রতি কিউবিক মিটার বাতাসে অতিসূক্ষ্ম ধূলিকণা পিএম ২.৫-এর উপস্থিতি ৫ মাইক্রোগ্রাম বা তার কম)-র শর্তগুলি পূরণ করতে পারেনি! মাত্র ৬টি দেশ হু-এর মাপকাঠি অনুযায়ী দূষণ নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে এস্তোনিয়া, অস্ট্রেলিয়া, নিউ জ়িল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, কানাডা এবং আইসল্যান্ড।
ভারতের ‘দূষিততম শহর’ হিসাবে রাজস্থানের ভিওয়ান্ডিকে চিহ্নিত করা হয়েছে ওই রিপোর্টে। বলা হয়েছে, ওই শহরের বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে পিএম২.৫-এর উপস্থিতি ৯২.৭ মাইক্রোগ্রাম! বায়ুদূষণের নিরিখে ভারতীয় উপমহাদেশে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি পাকিস্তানের লাহোরের। সেখানে বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে পিএম২.৫-এর উপস্থিতি ৯৭.৪ মাইক্রোগ্রাম। লাহোরের পরেই রয়েছে ভিওয়ান্ডি। তার পর দিল্লি। গত এক বছরে ভারতের অবস্থান সামান্য ভাল হলেও এখনও দেশের ৬০ শতাংশ শহরাঞ্চলের বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে পিএম ২.৫-এর উপস্থিতি হু-র নির্ধারিত মাত্রার অন্তত ৭ গুণ বেশি বলে ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে।
পরিবেশবিদদের একাংশের মতে, শহরে যানবাহনের সংখ্যা, যানজটের বহর, শিল্পক্ষেত্রে শিথিল দূষণবিধি, এমনকি, শহর লাগোয়া গ্রামাঞ্চলের কৃষিক্ষেত্রে খড়বিচালি পোড়ানোর প্রবণতার মতো বিষয়গুলি বায়ুদূষণের মাত্রাকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। দূষণ প্রতিরোধে একটি সামগ্রিক, সুনির্দিষ্ট এবং সুসংহত নীতির প্রয়োজন। তাতে নতুন নির্মাণের জন্য নির্দিষ্ট বিধিনিষেধের পাশাপাশি, প্রয়োজন গণপরিবহণ নীতিরও। জোর দিতে হবে পরিবেশবান্ধব, পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের উপরেও।