ঘূর্ণিঝড়টি গুজরাতের জখাউ বন্দর থেকে ১৮০ কিলোমিটার পশ্চিম এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে। ছবি: পিটিআই।
উপকূলের দিকে যত এগোচ্ছে, শক্তিক্ষয় হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়ের’। অতি প্রবল নয়, প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিয়েই বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে সন্ধ্যায় মধ্যে আছড়ে পড়তে পারে। আছড়ে পড়ার সময় ‘বিপর্যয়ের’ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১১৫ কিলোমিটার। এমনটাই জানিয়েছে মৌসম ভবন।
প্রথম দিকে মৌসম ভবন বলেছিল, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের আকার নিয়ে গুজরাতে আছড়ে পড়তে পারে ‘বিপর্যয়’। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়টি যত উপকূলের দিকে এগোচ্ছে, সেটির শক্তি ক্ষয় হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়টি গুজরাতের জখাউ বন্দর থেকে ১৮০ কিলোমিটার পশ্চিম এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে। মৌসম ভবন জানাচ্ছে, ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর এবং উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হবে। তার পর সেটি সৌরাষ্ট্র এবং কচ্ছ পেরিয়ে সংলগ্ন জখাউ বন্দরের কাছে আছড়ে পড়বে। কচ্ছ এবং সৌরাষ্ট্রে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় ইতিমধ্যেই আটটি উপকূলীয় জেলা থেকে ৭৪ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে। শুধু কচ্ছ থেকেই সরানো হয়েছে ৩৪ হাজার ৩০০ বাসিন্দাকে। জামনগর থেকে ১০ হাজার, মোরবী থেকে ৯ হাজার ২৪৩, রাজকোট থেকে ৬ হাজার ৮৯, দেবভূমি দ্বারকা থেকে ৫ হাজার ৩৫, জুনাগড় থেকে ৪ হাজার ৬৪, পোরবন্দর থেকে ৩ হাজার ৪৬৯, গির সোমনাথ থেকে ১ হাজার ৬০৫ জনকে নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠানো হয়েছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) ১৮টি দল উপকূলীয় জেলাগুলিতে মোতায়েন করা হয়েছে।
এনডিআরএফের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার নিখিল মুধোলকার বৃহস্পতিবার বলেন, “বর্তমানে ৬০-৭০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইছে। আমরা উপকূলীয় এলাকা এবং নিচু এলাকাগুলি খতিয়ে দেখেছি। ওই জায়গাগুলিতে আমাদের বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। জনসাধারণের কাছে অনুরোধ সরকারি নির্দেশিকা মেনে চলুন। এই সময়ে ঘরে থাকুন।” শুধু এডিআরএফ নয়, উপকূলরক্ষী বাহিনীকেও মোতায়েন করা হয়েছে।
রাজ্য বিপর্যয় কেন্দ্র জানিয়েছে, বেশি কিছু জেলায় বুধবার থেকেই বৃষ্টির পরিমাণ বেড়েছে। ওই জেলাগুলির ৫৪টি তালুকে গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। দেবভূমি দ্বারকা জেলার খাম্বালিয়া তালুকে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়। ১২১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে ওই তালুকে। ৯২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে দ্বারকায়। মৌসম ভবন জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় যত উপকূলের দিকে এগোবে, বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে কচ্ছ, পোরবন্দর, দেবভূমি দ্বারকা, জামনগর এবং মোরবীতে।