বিমান থেকে নামার পর কানে তালা লাগে? ছবি: সংগৃহীত।
স্নান করার সময়ে কানে জল ঢুকলে অনেক সময়েই তালা লেগে যায়। কানের ভিতর ভোঁ ভোঁ করতে থাকে। ঠিক একই রকম অবস্থা হয় বিমানে চড়লেও। দিব্যি সব ঠিক ছিল। বিমান মাটি ছেড়ে খানিক দূর উড়তে না উড়তেই বিপত্তি! এমন অবস্থা হয় যে, নিজেকে বধির ভাবলেও মন্দ হয় না। উল্টো দিকে দাঁড়িয়ে থাকা বিমানসেবিকার কথাও শুনতে পাওয়া যায় না। তাঁদের হাত, মুখ নাড়া দেখে ঠাহর করতে হয়। কিন্তু এমন সমস্যা কেন হয়, তা কি জানেন?
যাঁরা ঘন ঘন বিমানে যাতায়াত করেন, এই সমস্যা তাঁদের কাছে নতুন নয়। বিমানের একঘেয়ে আওয়াজ, কান বন্ধ হয়ে যাওয়ার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই কর্ণকুহরে তুলো, ইয়ার প্লাগ গুঁজে রাখেন। এই টোটকায় যে সব সময়ে উপকার হয়, তা নয়। আসলে, মাটি ছেড়ে আকাশে ওড়ার সময়ে বাতাসের চাপে কান বন্ধ হয়ে যায়। নাক-মুখ দিয়ে বাতাস প্রবেশ করে কর্ণকুহরের মধ্যবর্তী অংশ পূর্ণ করে দেয়। বাইরের সঙ্গে দেহের অভ্যন্তরের চাপের সামঞ্জস্য রাখতে সাহায্য করে কানের মধ্যে থাকা বিশেষ একটি টিউব। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে ‘ইউস্টেশিয়ান টিউব’ বলা হয়। নাক এবং কানের সঙ্গে যুক্ত থাকে এই টিউব। নাক দিয়ে হাওয়া প্রবেশ করে এই টিউবের মধ্যবর্তী অংশ ভরাট করে দেয়। ফলে কানও বন্ধ হয়ে যায়। আকাশে ওই উচ্চতায় থাকার পর আবার বিমান মাটি ছুঁলেও কিন্তু একই রকম সমস্যা হতে পারে।
এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে কী করণীয়?
· বিমান ওঠা বা নামার সময়ে হাই তোলা যেতে পারে। কানের সঙ্গে মুখের পেশির সংযোগ রয়েছে। হাই তোলার সময়ে পেশিগুলি সক্রিয় থাকলে কানের ইউস্টেশিয়ান টিউব সহজে বায়ুপূর্ণ হতে পারে না।
· বিমান ওঠা বা নামার সময়ে ঘুমোতে বারণ করছেন অভিজ্ঞরা। জেগে থাকলে, কথা বললে কিংবা খাবার খেলে এই সমস্যা খানিকটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
· তুলোর বদলে কানে ইয়ারফোন বা ইয়ারপ্লাগ গুঁজে রাখা যেতে পারে। এই টোটকাতেও কানে তালা লাগার সমস্যা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকে।