Coronavirus in India

Corona Vaccine: প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ়ে ঢের পিছিয়ে বাংলা

গোড়া থেকেই পশ্চিমবঙ্গ কম টিকা পেয়ে আসছে বলে অভিযোগ করে এসেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৭:২৫
Share:

দেশের অর্ধেক মানুষের যখন করোনা প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ় নেওয়া হয়ে গিয়েছে, তখন প্রথম দফায় প্রতিষেধক নেওয়ার দৌড়ে জাতীয় গড়ের চেয়ে অনেক পিছিয়ে পশ্চিমবঙ্গ। গোটা দেশে এই মুহূর্তে প্রায় ৫৫ শতাংশ মানুষের প্রথম ডোজ় নেওয়া হয়ে গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে ৪১ শতাংশের কিছু বেশি মানুষ প্রথম ডোজ় পেয়েছেন। তুলনায় হিমাচলপ্রদেশ, সিকিম, উত্তরাখণ্ডের মতো ছোট রাজ্যে প্রায় ১০০ শতাংশ মানুষ প্রথম ডোজ় পেয়ে গিয়েছেন। জনসংখ্যায় বড় রাজ্যের মধ্যে কেরলে ৮০ শতাংশ, মধ্যপ্রদেশে ৭০ শতাংশ ও গুজরাতে ৭১ শতাংশ মানুষ করোনা টিকার প্রথম ডোজ় পেয়েছেন।

Advertisement

গোড়া থেকেই পশ্চিমবঙ্গ কম টিকা পেয়ে আসছে বলে অভিযোগ করে এসেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে পাঠানো টিকার সংখ্যা বাড়ানোর জন্য একাধিক বার প্রধানমন্ত্রীর কাছে দরবার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একাধিক বার দৌত্যের পরে অগস্ট মাস থেকে টিকা সরবরাহ বাড়ে রাজ্যে। ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের প্রায় ৯৪ কোটি মানুষকে টিকাকরণের আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের মতে এর মধ্যে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশের প্রায় ৫৫ শতাংশ মানুষ অন্তত একটি ডোজ় পেয়েছেন। যার মধ্যে হিমাচলপ্রদেশে ৯৯.৬ শতাংশ, সিকিমে প্রায় ১০০ শতাংশ, ত্রিপুরায় ৮৯ শতাংশ মানুষ প্রথম ডোজ়। তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে প্রথম ডোজ় পেয়েছেন তিন কোটির সামান্য কিছু বেশি মানুষ। যা রাজ্যের টিকাপ্রাপক জনসংখ্যার ৪১ শতাংশের কিছু বেশি।

প্রতিবেশী ঝাড়খণ্ডে প্রথম ডোজ় পেয়েছেন ৪২.২ শতাংশ। উত্তরপ্রদেশে পেয়েছেন ৪২.২ শতাংশ। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বক্তব্য, পরিস্থিতি যা, তাতে পশ্চিমবঙ্গ
কার্যত তালিকার একেবারে শেষের দিকে রয়েছে।

Advertisement

তাৎপর্যপূর্ণ হল, প্রথম ডোজ় দেওয়ার ক্ষেত্রে গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ বা ঝাড়খণ্ডের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গ পিছিয়ে থাকলেও, দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্যের ফল অন্যান্য অনেক রাজ্য থেকে বেশ ভাল। তার কারণ ব্যাখ্যা করে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘এটা মনে রাখতে হবে, জনসংখ্যার নিরিখে অন্য রাজ্যের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গ শুরুতে টিকা অনেক কম পেয়েছে। টিকার জোগান কিছুটা বেড়েছে অগস্টে। তা দিয়ে যত বেশি সংখ্যক লোককে প্রতিষেধক দেওয়া যায়, তার প্রচেষ্টা চলছে। এক দিনে ১২ লক্ষের বেশি মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য রাজ্য কত বেশি সংখ্যক মানুষকে অন্তত প্রথম ডোজ় দেওয়া যায়, সে দিকে জোর দিয়েছে। কিন্তু এ রাজ্যে মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে প্রথম ডোজ়ের পরে দ্বিতীয় ডোজ় যাতে বকেয়া না-থাকে সে দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। সেই কারণে করোনা টিকার দু’টি ডোজ় পাওয়া মানুষের সংখ্যা এক কোটি পার করে গিয়েছে।’’

একই সুরে কেন্দ্রের ব্যাখ্যা, টিকার স্বল্পতার কথা মাথায় রেখে কিছু রাজ্যে প্রথম ডোজ়ের সঙ্গেই প্রাপকদের দ্বিতীয় ডোজ় পাওয়া নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছে। সেই রাজ্যগুলির তালিকায় পশ্চিমবঙ্গও রয়েছে। ফলে রাজ্যের প্রথম ডোজ় যত জন পেয়েছেন, তার অর্ধেক দ্বিতীয় ডোজ় পেয়ে গিয়েছেন। সার্বিক ভাবে দেখতে গেলে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ় পাওয়ার প্রশ্নে অন্যদের চেয়ে ভাল অবস্থানে রয়েছে বাংলা। তবে পশ্চিমবঙ্গকে প্রথম ডোজ় দেওয়ার ক্ষেত্রে গতি বাড়াতে হবে। তা হলেই ঘাটতি মেটানো সম্ভব হবে।

রাজ্য সরকারের সূত্রের মতে, গোড়ার দিকে টিকার স্বল্পতা কাটিয়ে রাজ্যে গত এক-দেড় মাসে টিকাকরণের হার উল্লেখজনক ভাবে বেড়েছে। কেন্দ্রের কাছ থেকে টিকা আসার সংখ্যাও বেড়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দাবি, গত অগস্ট মাসে পশ্চিমবঙ্গকে প্রায় এক কোটির কাছাকাছি টিকা সরবরাহ করা হয়েছে। রাজ্য তা খরচ করতে সক্ষম হওয়ায় সেপ্টেম্বর মাসে তা বাড়িয়ে ১.২ কোটি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। কেন্দ্র আশা করছে, প্রথম ডোজ়ের ক্ষেত্রে যে ঘাটতি রয়েছে তা আগামী দিনে কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে পশ্চিমবঙ্গ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement