লোকসভা স্পিকার ওম বিড়লা। ছবি: পিটিআই।
সাংসদ পদ খারিজের পরে রাহুল গান্ধীর উপরে অবিচারের অভিযোগকে আরও তীব্র করতে কংগ্রেস লোকসভা স্পিকার ওম বিড়লার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার কথা ভাবছে।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, গত কাল কংগ্রেসের সংসদীয় দলের বৈঠকে এই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অনাস্থা প্রস্তাবের খসড়া তৈরি করা হচ্ছে। তা চূড়ান্ত হলে বাকি বিরোধী দলগুলিরও সমর্থন চাওয়া হবে। অনাস্থা প্রস্তাবে স্পিকারের বিরুদ্ধে ‘পক্ষপাতিত্ব’, রাহুলের সাংসদ পদ খারিজে ‘তাড়াহুড়ো করে সিদ্ধান্ত’ নিয়ে অভিযোগ তোলা হবে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী সোমবার এই প্রস্তাব আনা হবে। সে ক্ষেত্রে ভারতীয় সংসদের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও স্পিকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আসবে।
কংগ্রেস নেতারা অবশ্য মানছেন, এই প্রস্তাব পাশ হবে এমন সম্ভাবনা নেই। সোমবার সংসদে হট্টগোল চলবে। ফলে হট্টগোলের মধ্যে প্রস্তাব পেশেরও সমস্যা থাকবে। কিন্তু এর প্রধান উদ্দেশ্য হবে শাসক শিবিরে বার্তা পৌঁছে দেওয়া। বৃহস্পতিবার মোদী পদবি নিয়ে মানহানির মামলায় সুরাতের আদালত রাহুল গান্ধীর সাজা ঘোষণার পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই লোকসভার সচিবালয় তাঁর সাংসদ পদ খারিজের বিজ্ঞপ্তি জারি করে। কংগ্রেস সাংসদ মণীশ তিওয়ারি ইতিমধ্যেই লোকসভায় মুলতুবি প্রস্তাব এনে অভিযোগ তুলেছেন, সংবিধানের ১০২(১) অনুচ্ছেদে কোনও সাংসদের সদস্যপদ খারিজের কথা বলা হয়েছে। সংবিধানের ১০৩(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, সাংসদ পদ খারিজের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে রয়েছে। ১০৩(২) অনুচ্ছেদ বলছে, তার আগে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা জরুরি। তা ছাড়া, সুরাতের আদালত রাহুলকে সাজা দিলেও উচ্চ আদালতে আর্জির জন্য ৩০ দিনের সময় দিয়েছিল। তার আগেই সাংসদ পদ খারিজ করে দেওয়া বিচারের নিয়মের বিরুদ্ধে। কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ, আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিও একই যুক্তি দিয়েছেন। এর আগে রাহুল তথা কংগ্রেস তাঁর মোদী-আদানি সম্পর্ক নিয়ে বক্তব্য সংসদের নথি থেকে মুছে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন। লোকসভায় বলতে গেলে মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ তুলেছিলেন।
বিরোধী শিবিরের অনেক দল অবশ্য এখনও কংগ্রেসের প্রস্তাবের সঙ্গে একমত নয়। তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য, স্পিকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব হয় না। তাঁকে পদ থেকে সরানোর জন্য ‘ইমপিচমেন্ট’ প্রস্তাব আনা যায়। সব দল একমত না হলে বিরোধী ঐক্যে ধাক্কা লাগতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে।