কোলার লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত আটটি বিধানসভা কেন্দ্রেই ভরাডুবি বিজেপির। চলছে উদযাপন। ছবি: পিটিআই।
২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের আগে কোলারে প্রচারে গিয়ে ‘মোদী-পদবি’ নিয়ে সেই বিতর্কিত মন্তব্য রাহুল গান্ধীর। তার পরেই কোলার লোকসভা কেন্দ্রে হেরে গিয়েছিল কংগ্রেস। ওই আসনে প্রথম বার জিতেছিল বিজেপি। চার বছর পর, ২০২৩ সালে কোলারের ওই মন্তব্যের জন্য সাংসদ পদ হারান রাহুল। তার পরেই বিধানসভা নির্বাচনে কোলার লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত আটটি বিধানসভা কেন্দ্রেই ভরাডুবি বিজেপির। দু’টি কেন্দ্রে মাত্র দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তারা। অন্য দিকে প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পাঁচটি কেন্দ্রে এগিয়ে কংগ্রেস।
এক কালে সোনার খনির জন্য বিখ্যাত ছিল কোলার। পৃথিবীর দ্বিতীয় গভীরতম সোনার খনি ছিল কর্নাটকের কোলারে। ১৯৫২ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এই লোকসভা কেন্দ্র টানা দখলে রেখেছিল কংগ্রেস। মাঝে ১৯৮৪ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত এই কেন্দ্রের সাংসদ ছিলেন অবিভক্ত জনতা পার্টির ভি ভেঙ্কটেশ। ২০১৪ সালে প্রায় সারা দেশে যখন ‘মোদী-ঝড়’, তখনও কোলার দখলে রেখেছিল কংগ্রেস। সেই কোলার কেন্দ্রই ২০১৯ সালে হাতছাড়া হয় কংগ্রেসের। অনেকেই তার জন্য রাহুলের সেই মন্তব্যকে কিছুটা দায়ী করেছিলেন। ২০১৯ লোকসভা ভোটের আগে কোলারে গিয়ে রাহুল বলেছিলেন, ‘‘কেন সব চোরেদের মোদী পদবী হয়?’’
সুরত আদালতে এই নিয়ে মামলা হয়। ২০২৩ সালের ২৩ মার্চ দোষী সাব্যস্ত হন রাহুল। সাংসদ পদ হারান তিনি। তার পরেই কি উল্টে গেল কোলারের গদি? কোলার, কোলার গোল্ড ফিল্ড, চিন্তামণি, মালুর, বঙ্গারাপেটে এগিয়ে রয়েছে কংগ্রেস। মালুরে সামান্য ভোটে হলেও এগিয়ে কংগ্রেস। বাকি শ্রীনিবাসপুর, মুলবাগাল, সিদলাঘাট্টা, এই তিন কেন্দ্রেই এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এগিয়ে জেডিএস। একমাত্র কোলার গোল্ড ফিল্ড এবং মালুরে দ্বিতীয় স্থানে বিজেপি।
২০২৩ বিধানসভা নির্বাচনে কোলার বিধানসভা বিজেপির প্রার্থী ছিলেন ভার্থুর প্রকাশ। ভার্থুর এর আগে কোলার বিধানসভা কেন্দ্র থেকে নির্দল প্রার্থী হিসাবে দু’বার জয়ী হয়েছিলেন। এ বার বিজেপির টিকিটে লড়েও শেষ রক্ষা হল না।
প্রকাশকে টক্কর দিতে কংগ্রেস কোলার বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করেছিল কোথুর জি মঞ্জুনাথকে। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই আসনে লড়াইয়ের পরিকল্পনা করেছিলেন কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। শেষ পর্যন্ত হাইকমান্ডের নির্দেশে পিছু হঠেন। এই কেন্দ্রে রেইকি করে গিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা। শীর্ষ নেতৃত্বকে তিনি রিপোর্ট দিয়ে জানিয়েছিলেন যে, এই আসনে কংগ্রেসের জয় সহজ হবে না। সে কারণে সিদ্দারামাইয়াকে সরিয়ে নেয় কংগ্রেস।
গত ২০১৮ সালের নির্বাচনে কংগ্রেসের সৈয়দ জামির পাশাকে হারিয়ে জিতেছিলেন জনতা দল সেক্যুলারের প্রার্থী কে শ্রীনিবাস গৌড়া। জয়ের পরেও এ বছর আর শ্রীনিবাসকে প্রার্থী করেনি জেডিএস। পরিবর্তে ২০২৩ সালের নির্বাচনে এইচ ডি দেবগৌরার দল প্রার্থী করেছিল সিএমআর শ্রীনাথকে। সেই কোলার বিধানসভা কেন্দ্র এ বার জেডিএসের থেকে ছিনিয়ে নিল কংগ্রেস।