ভারতে নিযুক্ত প্রাক্তন চিনা রাষ্ট্রদূত সান উইদং এবং বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের তোলা ‘চিনা সখ্যের’ জবাব দিতে এ বার বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে নিশানা করল কংগ্রেস। সোমবার এআইসিসির মুখপাত্র পবন খেড়া অভিযোগ করেছেন, জয়শঙ্করের ছেলেও চিন থেকে অর্থসাহায্য পেয়েছেন।
সাংবাদিক বৈঠকে সোমবার পবন বলেন, ‘‘বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করের ছেলে যে থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সংস্থার প্রধান, চিনা দূতাবাস থেকে তারা আর্থিক অনুদান পেয়েছে।’’ পাশাপাশি, হিমালয় সংলগ্ন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলএসি) সম্ভাব্য চিনা হামলার মোকাবিলায় ইউপিএ জমানায় ভারতীয় সেনার ‘মাউন্টেন স্ট্রাইক কোর’ গড়ার উদ্যোগ শুরু হলেও নরেন্দ্র মোদী সরকারের আমলে তা হিমঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াংয়ের এলএসিতে গত ৯ ডিসেম্বর চিনা ফৌজের অনুপ্রবেশ এবং ভারতীয় সেনাদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে সংসদে আলোচনার দাবিতে ধারাবাহিক ভাবে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে কংগ্রেস। কিন্তু মোদী সরকার তাতে রাজি হয়নি। এই পরিস্থিতিতে গত সপ্তাহে শাহ অভিযোগ করেন, ২০০৫-০৬ এবং ২০০৬-০৭ অর্থবর্ষে কংগ্রেস নেতা-নেত্রীদের পরিচালিত রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশন ১ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা অনুদান হিসাবে চিন দূতাবাস থেকে পেয়েছে। যা ‘ফরেন কন্ট্রিবিউশন রেগুলেশন অ্যাক্ট’ (এফসিআরএ)-এ নীতির পরিপন্থী।
শাহ বলেন, ‘‘নিয়ম ভেঙে চিনা অনুদান নেওয়ার কারণেই রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশনের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হয়েছে।’’ এই পরিস্থিতিতে পবনের পাল্টা অভিযোগ, বিজেপির ‘ঘরেও’ এসেছে চিনা অনুদান। অতীতে গালওয়ানে হামলার সময় প্রধানমন্ত্রী মোদী চিনের নামটুকু মুখে আনেননি অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সেনার বীর, কিন্তু রাজা (মোদী) ভিতু।’’ বিজেপি নেতারা ধারাবাহিক ভাবে চিনে গিয়ে সে দেশের শাসক কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন বলেও দাবি করেছেন কংগ্রেস মুখপাত্র।
প্রসঙ্গত, কয়েক বছর আগে বিদেশ মন্ত্রক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিন সফরের অনুমতি না দেওয়ার পরে একটি রিপোর্টে দেখা যায় ওই সময় বিজেপি শাসিত ৬টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা বেজিং ঘুরে এসেছেন! এর পর সংসদে বিতর্ক তৈরি হলে লিখিত জবাবে তৎকালীন বিদেশ প্রতিমন্ত্রী ভি কে সিংহ বলেছিলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীদের চিন সফরে আদৌ কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। বরং বিদেশ মন্ত্রক এবং চিনের কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা রয়েছে, যাতে দু’দেশেরই প্রাদেশিক নেতাদের মধ্যে যোগাযোগ গড়ে ওঠে।’’