রুশ হামলায় বিধ্বস্ত ইউক্রেনের রাজধানী কিভ। ছবি: রয়টার্স।
দু’দিনের মধ্যেই আকাশ-রণকৌশল বদলে ফেলল মস্কো। ‘বৃহত্তম ক্ষেপণাস্ত্র হামলা’র পরে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ইউক্রেনের রাজধানী কিভ লক্ষ্য করে উড়ে এল ঝাঁকে ঝাঁকে রুশ বোমারু ড্রোন। কিভের উপর হামলা চালাতে রুশ বিমানবাহিনীর দু’টি ‘স্ট্র্যাটেজিক বম্বার’ ব্যবহার করা হয়েছে বলেও ইউক্রেনের দাবি। এই পরিস্থিতিতে সোমবার রাজধানীর আকাশে ‘উড়ান সতর্কতা’ জারি করেছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সরকার।
গত ৩ মাস ধরেই ইরানে তৈরি ‘কামিকাজে’ (আত্মঘাতী) ড্রোন ব্যবহার করে ইউক্রেনের বিভিন্ন অংশে হামলা চালাচ্ছে রুশ ফৌজ। তবে সোমবার ভোররাতের মতো বড় হামলা আগে হয়নি ইউক্রেনের রাজধানীতে। অন্তত ৩৫টি ড্রোন ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলে বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং জল সরবরাহ কেন্দ্রগুলিতে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার রাতে ইউক্রেনের রাজধানীকে নিশানা করে ধারাবাহিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল রুশ ফৌজ।
প্রবল শীত আর তুষারপাতের মধ্যে ঝাঁকে ঝাঁকে রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের হামলায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে শহরের বিদ্যুৎ পরিষেবা। ইউক্রেন সরকারের একটি সূত্র পশ্চিমী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, ‘ব্ল্যাক আউটের’ প্রভাব পড়েছে শহরের জল সরবরাহ এবং অন্যান্য পরিষেবায়। ঘটনাচক্রে, শুক্রবারই ইউক্রেনের তরফে দাবি করা হয়, শীতের মধ্যেই কিভ দখলের লক্ষ্যে নতুন প্রস্তুতি শুরু করেছে প্রায় ২ লক্ষ রুশ ফৌজ। সেই বাহিনীতে রয়েছে বাছাই করা বেশ কিছু গোলন্দাজ, ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া ব্যাটেলিয়ন।
ইউক্রেন সেনার জেনারেল ভ্যালেরি জ়ালুঝনি একটি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘‘নতুন বছরের গোড়াতেই কিভ দখলের লড়াইয়ে নামতে কৌশলগত প্রস্তুতি শুরু করেছে প্রায় ২ লক্ষ রুশ সেনা। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ হামলার বর্ষপূর্তি। তার আগেই রাজধানী কিভ দখল করতে চায় রাশিয়া।’’ তার পরেই কিভে নতুন করে হামলা শুরু করেছে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাহিনী। কিভের গভর্নর ওলেক্সি কুলেবা সোমবার বলেন, ‘‘আমাদের শহরকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিতে চান পুতিন।’’
উত্তর-পূর্বের খারকিভ, জ়াপোরিজিয়া, দক্ষিণে মাইকোলিভের বেশ কিছু এলাকায় গত কয়েক মাসে রুশ সেনার হাতছাড়া হয়েছে। বস্তুত, রুশ সেনা আর কত দিন যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে সামরিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেরই। এই পরিস্থিতিতে মস্কোর নির্দেশে মরিয়া হয়েই বেছে বেছে বিদ্যুৎ এবং জল সরবরাহ কেন্দ্রগুলিকে নিশানা করা হচ্ছে বলে ইউক্রেনের অভিযোগ।