পুলিশের সঙ্গে পড়ুয়াদের খণ্ডযুদ্ধ। শুক্রবার দিল্লিতে জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছবি: রয়টার্স।
নতুন নাগরিকত্ব আইনের আঁচে জ্বলছে দেশের উত্তর থেকে দক্ষিণ। দিল্লিতে আজ ব্যাপক বিক্ষোভ দেখান জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ও শিক্ষকেরা। বিক্ষোভ সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে। লাঠিচার্জ থেকে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো— বাদ যায়নি কিছুই। নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে আগামী ১৭ ডিসেম্বর তামিনাড়ুতে বড়সড় প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে ডিএমকে।
নাগরিকত্ব আইন-বিরোধী সব চেয়ে বড় বিক্ষোভটি আজ হয়েছে দিল্লিতে। গত কালই জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা জানিয়েছিলেন, নয়া নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে সংসদ ভবন পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করবেন। আজ ওই বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দেন প্রায় দু’হাজার পড়ুয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ের অদূরেই ব্যারিকেড করে মিছিল আটকায় পুলিশ। সেখান থেকেই গোলমালের সূত্রপাত্র। বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড টপকে এগোতে শুরু করলে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। পরে বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। জামিয়া মিলিয়ার প্রাক্তন পড়ুয়া মজিদ আলম বলেন, ‘‘ব্যারিকেড ভাঙতেই পুলিশ লাঠি চালাতে থাকে। পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয় কাঁদানে গ্যাস ছোড়ার পরে। পুলিশি বলপ্রয়োগের কারণেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়েছে।’’ বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশই প্রথম লাঠি চালিয়েছে। ৬৩ জন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। যদিও পুলিশের বক্তব্য, মিছিল শান্তিপূর্ণ ছিল না, পডু়য়ারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে শুরু করলে লাঠিচার্জ করা হয়। অন্তত ৫০ জনকে আটক করে পুলিশ।
বিক্ষোভের জেরে পটেল চক ও জনপথ মেট্রো স্টেশনের ঢোকা ও বেরোনোর গেট বন্ধ করা হয়। টুইটারে মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানান, দিল্লি পুলিশের পরামর্শে গেটগুলি বন্ধ করা হয়। বিক্ষোভ চলাকালীন ওই দুই স্টেশনে ট্রেনও দাঁড়ায়নি। যন্তরমন্তরে আজ বিক্ষোভ দেখায় জমিয়তে উলেমা-হিন্দ।
আরও পড়ুন: নাগরিকত্ব আইন নিয়ে কোর্টে মহুয়া
আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ও শিক্ষকেরাও দু’দিন ধরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। ১৪৪ ধারা ভাঙায় ২০ জনকে কাল গ্রেফতারও করে পুলিশ। গত রাত থেকে আজ বিকেল ৫টা পর্যন্ত আলিগড়ে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখে জেলা প্রশাসন। পড়ুয়া ও শিক্ষকেরা মিছিল করে জেলা প্রশাসনকে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি নিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ মিছিলের অনুমতি দেয়নি। বিহারের গয়াতেও নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে আজ বিক্ষোভ মিছিল হয়। বেশ কয়েকটি মুসলিম সংগঠনের ডাকে আজ হায়দরাবাদেও নাগরিকত্ব আইন বিরোধী বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন কয়েকশো মানুষ।
আরও পড়ুন: ফাঁসুড়ে ‘তৈরি’, চার ধর্ষক অবসাদে
রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএবি) সমর্থন করেছে এডিএমকে। তামিল জনগণের সঙ্গে এডিএমকে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ করেছে অভিযোগ করে ডিএমকে প্রধান এম কে স্ট্যালিন আজ বলেন, ‘‘কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের তামিল-বিরোধী মনোভাবের প্রতিবাদে আগামী ১৭ ডিসেম্বর জেলাগুলিতে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিবাদ হবে।’’