ইসরোর প্রস্তাব মেনে চন্দ্রযান-৪ কর্মসূচিতে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। ছবি: ইসরো থেকে।
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো)-র তরফে বার্তা দেওয়া হয়েছিল গত মার্চ মাসেই। বুধবার সেই প্রস্তাবে ছাড়পত্র দিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ইসরোর প্রস্তাব মেনে চন্দ্রযান-৪ কর্মসূচিতে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অনুমোদিত হয়েছে, শুক্রে মহাকাশযান পাঠানো এবং মহাকাশ স্টেশন নির্মাণের প্রস্তাব।
পোশাকি নাম, লুনার পোলার এক্সপ্লোরেশন মিশন বা লুপেক্স। আদতে ইসরোর চতুর্থ দফার চন্দ্রাভিযান। চন্দ্রযান-৩-এর সাফল্যের পর চন্দ্রাভিযানকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যেতে আগ্রহী ইসরো ইতিমধ্যেই জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জাক্সা (জাপান এরোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি)-র সঙ্গে এ বিষয়ে একটি সমঝোতা করেছে। চাঁদের মাটিতে সফল অবতরণের পর এই অভিযানের ‘পাখির চোখ’ হবে মেরু অঞ্চল-সহ বিভিন্ন এলাকায় জল এবং বিভিন্ন খনিজের অনুসন্ধান।
চন্দ্রযান-৪ দু’টি ধাপে উৎক্ষেপণ করা হবে। প্রথম বার এলভিএম-৩ এবং দ্বিতীয় ক্ষেত্রে পিএসএলভি ব্যবহার করা হবে। চন্দ্রযান-৪-এ পাঁচটি আলাদা আলাদা যান (রোভার এবং রেঞ্জার) থাকবে বলে ইসরো সূত্রের খবর। অভিযান সফল হলে আমেরিকার অ্যাপোলো অভিযান, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের লুনা এবং চিন তার চ্যাং অভিযানের সঙ্গে এক সারিতে ঠাঁই পাবে লুপেক্স।
ইসরো ২০১৮ সালে শুক্র অভিযানের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিল। স্থির হয়েছিল, ২০২৩ সালের মধ্যেই পৃথিবীর দ্বিতীয় নিকটতম গ্রহে পাঠানো হবে মহাকাশযান। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ইসরোর বিজ্ঞানীরা চন্দ্রযান অভিযান নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। বুধবার সেই ‘ভেনাস অরবিটার’ কর্মসূচি নতুন করে মন্ত্রিসভার ছাড়পত্র পেয়েছে। এ ছাড়া অনুমোদন পেয়েছে প্রথম দেশে তৈরি মহাকাশযানে ভারতীয় নভোশ্চর পাঠানোর গগনযান প্রকল্প এবং ‘ইন্ডিয়ান স্পেস স্টেশন’ তৈরির প্রস্তাব।
চন্দ্রযান-৪-এর অভিযান সফল হলে আমেরিকা, রাশিয়া এবং চিনকে টেক্কা দেবে ইসরো। ওই দেশগুলি ইতিমধ্যে যে কাজ করেছে, তা ভারতও করে দেখাতে চলেছে। ইসরো প্রধান এস সোমনাথ সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, চন্দ্রযান-৪-এর মাধ্যমে শুধু চাঁদের মাটিতে অবতরণই নয়, ইসরো সেখান থেকে মাটি এবং পাথরের নমুনা সংগ্রহ করে দেশে নিয়ে আসতে চায়। সেই পরিকল্পনাই করা হচ্ছে। অন্য দিকে, ইসরো সূত্রের খবর, পৃথিবী থেকে ৪০০ কিলোমিটার উচ্চতায় যে কক্ষপথ রয়েছে সেখানে ২০৩৫ সালের মধ্যে স্থান পাবে ভারতের স্পেস স্টেশন। মহাকাশে ‘অ্যাস্ট্রোবায়োলজি’ এবং ‘মাইক্রোগ্র্যাভিটি’ সংক্রান্ত নানা রকম গবেষণা করা হবে ওই স্পেস স্টেশনে।