২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি পঞ্জাবে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। ফাইল চিত্র।
পঞ্জাব সফরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনায় কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, এই নিয়ে জানতে সে রাজ্যের সরকারের কাছ থেকে রিপোর্ট চাইল কেন্দ্র। গত বছরের ৫ জানুয়ারি পঞ্জাবে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সময় তাঁর যাত্রাপথ অবরোধ করেছিলেন এক দল বিক্ষোভকারী। যার জেরে প্রায় ১৫-২০ মিনিট আটকে ছিল প্রধানমন্ত্রীর কনভয়। এই ঘটনায় তৎকালীন চরণজিৎ চন্নী সরকারের ভূমিকা ঘিরে প্রশ্ন উঠেছিল। সেই ঘটনার এ বার সবিস্তারে রিপোর্ট চাইল কেন্দ্রীয় সরকার। রবিবার সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে।
ওই ঘটনায় স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপ (এসপিজি) আইনে পঞ্জাবের পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার কথা ভাবছে কেন্দ্র। এসপিজি-র ১৪ ধারা অনুযায়ী কোনও রাজ্যে প্রধানমন্ত্রী গেলে এসপিজিকে সবরকম সাহায্যের দায়িত্ব থাকে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের হাতে।
এএনআই সূত্রে খবর, মোদীর পঞ্জাব সফরের সময় নিরাপত্তায় গলদের ঘটনায় যে সব পুলিশ আধিকারিকের ভূমিকা রয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা জানতে পঞ্জাব সরকারকে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পঞ্জাব সরকারের বিলম্বের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে ওই চিঠিতে। এই নিয়ে রিপোর্ট জমা দিতে পঞ্জাবের মুখ্যসচিব বিজয়কুমার জাঞ্জুয়াকে নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা। সূত্রের খবর, গত মাসেই চিঠি দেওয়া হয়েছিল পঞ্জাবের আপ সরকারকে। দ্রুত এই রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র।
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় ফাঁকের ঘটনায় তদন্তে নেমেছিল সুপ্রিম কোর্টের নিযুক্ত অনুসন্ধান কমিটি। ৬ মাস আগে ওই কমিটির রিপোর্টে ইঙ্গিত করা হয়েছিল যে, নিরাপত্তায় গাফিলতির জন্য পঞ্জাবের তৎকালীন মুখ্যসচিব অনিরুদ্ধ তিওয়ারি, পুলিশের প্রধান এস চট্টোপাধ্যায় এবং অন্য আধিকারিকরাই দায়ী। এর আগে, নিরাপত্তায় গাফিলতির ঘটনায় ৩ সদস্যের একটি কমিটি তৈরি করেছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। মোদীর সফরে নিরাপত্তায় থাকা পঞ্জাবের এক ডজনেরও বেশি পুলিশ আধিকারিককে তলব করেছিল ওই কমিটি। পঞ্জাব সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এর পরই সেই সময় পঞ্জাবে কংগ্রেসের সরকার তদন্তের জন্য উচ্চ পর্যায়ের কমিটি তৈরি করেছিল।
পঞ্জাবের উড়ালপুলে প্রায় ১৫-২০ মিনিট ধরে আটকে ছিল প্রধানমন্ত্রীর কনভয়। ফাইল চিত্র।
ঠিক কী ঘটেছিল? পঞ্জাবের হুসেইনিওয়ালায় জাতীয় শহিদ স্মারকে একটি কর্মসূচি ছিল প্রধানমন্ত্রীর। সকালে ভাটিন্ডা বিমানবন্দরে নেমে কপ্টারে করে গন্তব্যে পৌঁছনোর কথা ছিল তাঁর। কিন্তু আবহাওয়া খারাপ থাকায় বিমানবন্দর থেকে গাড়িতেই রওনা দেন তিনি। সেই সময়ই রাস্তা অবরোধ করেছিলেন এক দল বিক্ষোভকারী। যার জেরে উড়ালপুলে ১৫-২০ মিনিট আটকে ছিল প্রধানমন্ত্রীর কনভয়। ওই ঘটনার পর বিমানবন্দরে ফিরে আধিকারিকদের উদ্দেশে মোদী বলেছিলেন, ‘‘বেঁচে ফিরতে ফেরেছি, এই অনেক! এর জন্য মুখ্যমন্ত্রী (পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী)-কে আমার হয়ে ধন্যবাদ জানাবেন।’’