IPS Officers

Sonia Narang: বিজেপি মন্ত্রীকে চড়, কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রীকেও চ্যালেঞ্জ করেছিলেন আইপিএস সনিয়া

সনিয়ার আদর্শ তাঁর বাবা এ এন নারং। পুলিশের ডেপুটি সুপার হিসেবে অবসর নেন তিনি। সনিয়া জানিয়েছেন, বাবাকে দেখেই আইপিএস হওয়ার ইচ্ছে হয়েছিল তাঁর।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২১ ১৭:২৫
Share:
০১ ১৯

২০০৬ সাল। এক মহিলা আইপিএস অফিসার হঠাৎই গোটা দেশের আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসেন। বিজেপির এক বিধায়ককে প্রকাশ্যে সপাটে চড় মেরেছিলেন তিনি।

০২ ১৯

বিজেপির সেই চড় খাওয়া বিধায়ক বর্তমানে কর্নাটকের মন্ত্রী। নাম রেণুকাচার্য। ঘটনার দিন তিনি কংগ্রেস বিরোধী একটি প্রতিবাদ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। পুলিশ বার বার অনুরোধ করলেও রাস্তা ছাড়তে রাজি হননি।

Advertisement
০৩ ১৯

বিধায়ক কথা না শোনায় তাঁকে চড় মারেন মহিলা পুলিশকর্তা। গ্রেফতারও করেন তাঁকে। অভিযোগ, তাঁকে গালিগালাজও করেন বিধায়ক।

০৪ ১৯

এই একটি ঘটনাই গোটা দেশে পরিচিতি এনে দেয় ওই মহিলা আইপিএসকে। তাঁর নাম সনিয়া নারং। যদিও পুলিশ মহল তাঁকে চেনে ‘আয়রন লেডি’ নামে।

০৫ ১৯

হাসিমুখের আড়ালে সনিয়ার দৃঢ়চিত্ততা বিস্ময়ের কারণ। পুলিশ মহলে তাঁকে নিয়ে চালু রয়েছে নানা কাহিনিও।

০৬ ১৯

চণ্ডীগড়ের মেয়ে। সনিয়ার আদর্শ তাঁর বাবা এ এন নারং। পুলিশের ডেপুটি সুপার হিসেবে অবসর নেন তিনি। সনিয়া জানিয়েছেন, বাবাকে দেখেই আইপিএস হওয়ার ইচ্ছে হয়েছিল তাঁর। তাঁকেই তিনি নিজের আদর্শ মনে করেন।

০৭ ১৯

সমাজের চোখে পুলিশকর্তার সম্মান এবং তাঁর সমাজ বদলানোর ক্ষমতাই আকৃষ্ট করেছিল সনিয়াকে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েই ইউপিএসসির প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিলেন সনিয়া।

০৮ ১৯

পড়াশোনায় বরাবরই মেধাবী। উচ্চ মাধ্যমিকে শীর্ষ স্থান পেয়েছিলেন। পরে পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সোশিয়োলজি পড়ে স্বর্ণ পদক পেয়ে স্নাতক হন তিনি।

০৯ ১৯

২০০৬ সালের ঘটনাটি যখন ঘটে সনিয়া তখন কর্নাটকের দেবাঙ্গেরের পুলিশ সুপার। দু’বছর হল যোগ দিয়েছেন পুলিশ সার্ভিসে। বয়স সবে ২৭।

১০ ১৯

তবে কম বয়স বা অভিজ্ঞতা সঠিক পদক্ষেপ করার ক্ষেত্রে দ্বিধাগ্রস্ত করেনি সনিয়াকে। বিধায়ককে চড় মারার ঘটনায় রাজনৈতিক মহলের একাংশ তাঁর বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত হয়েছিল। স্বয়ং বিধায়ক রেণুকাচার্য তাঁর বদলির জন্য উঠেপড়ে লেগেছিলেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত সফল হননি।

১১ ১৯

সনিয়া বলেছিলেন, সততা এবং পরিশ্রম এই দু’টি বিষয় প্রশাসনিক ক্ষেত্রে থাকাটা অত্যন্ত জরুরি। এই দু’টি ক্ষেত্রে ঠিক থাকলে কেউ আটকাতে পারবে না।

১২ ১৯

২০০৪ সালে পুলিশ বিভাগে কেরিয়ার শুরু সনিয়ার। ২৫ বছরের শিক্ষানবীশ পুলিশকর্তাকে প্রথমেই পাঠানো হয়েছিল কর্নাটকের গুলবর্গা জেলায়। গুলবার্গ অপরাধমূলক কার্যকলাপের জন্য কুখ্যাত। সেখানে তাঁকে ভোট পরিচালনার দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হয়। গুলবার্গে সনিয়ার সুষ্ঠু ভোট পরিচালনা পুলিশ মহলের প্রশংসা পায়।

১৩ ১৯

বরাবরই কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করানো হয়েছে সনিয়াকে। প্রতি বারই সেই চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন, সসম্মানে উতরেও গিয়েছেন। ২০০৬ সালের ঘটনার পর তাঁকে সাম্প্রদায়িক সমস্যাসঙ্কুল বেলগামে পুলিশ সুপারের দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হয় । বেলগামের মতো এলাকায় তিনিই ছিলেন প্রথম মহিলা পুলিশ সুপার। দিন রাত এলাকায় ঘুরে ঘুরে সমাজবিরোধীদের খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছিলেন সনিয়া। সনিয়ার এই পদক্ষেপে ভয় পেয়ে এলাকা ছেড়েছিল বহু অপরাধী।

১৪ ১৯

২০১৩ সালে সরাসরি কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীকেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বসেন সনিয়া। কর্নাটকে তখন কংগ্রেসের সরকার। মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া ১৬ হাজার কোটি টাকার খনি কেলেঙ্কারিতে সনিয়ার নাম করেছিলেন।

১৫ ১৯

মুখ্যমন্ত্রীর ওই মন্তব্যের জবাব সর্বসমক্ষেই দেন সনিয়া। ২০১৩ সালে তখন তিনি বেঙ্গালুরুর দক্ষিণ শাখার ডেপুটি কমিশনার। বেঙ্গালুরুর ইতিহাসে তিনিই দ্বিতীয় মহিলা পুলিশকর্তা, যাঁকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।

১৬ ১৯

দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি সাধারণত অভিযোগকারী রাজনৈতিক পদাধিকারীর সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে দেখা করেই মিটিয়ে নেন পুলিশকর্তারা। সনিয়া কিন্তু সেই পথ ধরেননি।

১৭ ১৯

তিনি প্রকাশ্যে একটি বিবৃতি জারি করেন। লেখেন, ‘খবরের কাগজ মারফৎ জানতে পেরেছি মুখ্যমন্ত্রী আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন। যে খনি কেলেঙ্কারির দায় তিনি আমার উপর চাপিয়েছেন তা সত্যি নয়। যে সমস্ত এলাকায় ওই ঘটনা ঘটেছে, সেখানে কোনও দিন আমি দায়িত্বে ছিলামই না। তা হলে আমার নাম আসছে কোথা থেকে। এমনকি আমি খনি দফতরের দায়িত্বেও ছিলাম না কখনও। তবে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগের বিরুদ্ধে আমি আইনি পথেই লড়তে চাই। কারণ আমি জানি আমি সৎ।’ সনিয়ার এই উত্তরে অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন সিদ্দারামাইয়া।

১৮ ১৯

আইপিএস হিসেবে সনিয়ার কেরিয়ারের আরেকটি পালক লোকায়ুক্ত অফিসের দুর্নীতি ফাঁস করে দেওয়া। দুর্নীতি দমনের জন্য তৈরি লোকায়ুক্তের অন্দরেই চলছিল দুর্নীতি। সনিয়ার দৌলতে তা প্রকাশ্যে আসে। দায়িত্বে থাকা প্রাক্তন বিচারপতি ওয়াই ভাস্কর পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। গ্রেফতার হন তাঁর পুত্র ওয়াই অশ্বিনও।

১৯ ১৯

পুলিশ মহলে ‘আয়রন লেডি’ বা লৌহমানবী হিসাবে পরিচিত সনিয়া। তবে রান্নাঘরে অনীহা। এক পুত্রের মা। বিয়ে করেছেন এক আইপিএস কর্তাকেই। স্বামীর নাম গণেশ কুমার। তবে তাঁর সঙ্গে মাসে কদাচিৎ দেখা হয়। সনিয়া জানিয়েছেন, তিনি আর কিছু না হোক, পরিবারকে রাজমা-চাওল রেঁধে খাওয়াতে পারবেন। রাজমা-চাওল পঞ্জাবিদের পছন্দের খাবার। সনিয়ার কথায়, ‘আমার পরিবার বলে আমি এটা মন্দ রাঁধি না।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement