দুর্ঘটনার সেই দৃশ্য। ছবি: পিটিআই।
সোমবার রাতে মুম্বইয়ের কুরলায় বাস দুর্ঘটনায় সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত অন্তত ৪২ জন। কয়েক জনের অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। সেই আবহেই নিয়ন্ত্রণ হারানোর জেরে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিল পুলিশ। তবে কি বাসচালকের ‘ভুল’-এই দুর্ঘটনা? ইচ্ছাকৃত ভাবেই কি দুর্ঘটনা ঘটানো হয়েছিল মুম্বইয়ের বাসে? এখনও সে সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে চলেছেন তদন্তকারীরা।
বাস দুর্ঘটনার নেপথ্য কারণ খুঁজতে মঙ্গলবার সকালে দুর্ঘটনাস্থলে যায় ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের একটি দল। সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। বাসটির কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল কি না, খতিয়ে দেখা হয়েছে তা-ও। বাসটির খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখার দায়িত্বে ছিলেন মোটর বিশেষজ্ঞ ভরত যাদব। পরীক্ষার পর তিনিই জানিয়েছেন, নিয়ন্ত্রণ হারানোর জেরে দুর্ঘটনা ঘটেনি। গাড়ির ব্রেক অক্ষত রয়েছে। ফলে দুর্ঘটনার মুহূর্তে ‘ব্রেক ফেল’ হয়েছিল, এমন জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছেন তদন্তকারীরা। শুধু ব্রেকই নয়, সেই সঙ্গে বাসের অন্যান্য যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশও একেবারে অক্ষত রয়েছে।
সোমবার রাতেই বাসচালক সঞ্জয় মোরেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চালকের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলাও রুজু হয়েছে। সঞ্জয়কে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গত ১ ডিসেম্বরই চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। শুরুতেই মহারাষ্ট্র সরকারের অধীনস্থ স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বৃহন্মুম্বই ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট আন্ডারটেকিং (বেস্ট)-এর স্বয়ংক্রিয় ওই বাসটি চালানোর দায়িত্ব পান সঞ্জয়। এর আগেও তিনি এক ঠিকাদারের অধীনে বাসচালক হিসাবে কাজ করতেন। কিন্তু স্বয়ংক্রিয় বাস চালানোয় হাতেখড়ি হয় মাত্র দিন দশেক আগেই! এর পরেই প্রশ্ন উঠছে, তবে কি বাসচালকের অনভিজ্ঞতার কারণেই দুর্ঘটনা, না কি ‘ইচ্ছাকৃত ভুলে’?
এলাকার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, সোমবার রাত পৌনে ১০টা নাগাদ কুরলা থেকে আন্ধেরিগামী বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রায় ৩০-৪০টি গাড়িতে ধাক্কা মেরে ফুটপাথে উঠে যায়। গোটা ঘটনাটি ঘটে যায় মাত্র ৫২ থেকে ৫৫ সেকেন্ডের মধ্যে। প্রথম গাড়িটিতে ধাক্কা মারার পরেও বাসটি শেষমেশ প্রায় ৪৫০ মিটার দূরে গিয়ে থামে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, সম্ভবত প্রথম সংঘর্ষের পর ঘাবড়ে গিয়ে এমনটা ঘটিয়েছেন চালক। ঘটনায় চার পথচারী-সহ সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে মহারাষ্ট্রের ‘মহাজুটি’ সরকার। পাশাপাশি, নিহতদের পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা হয়েছে।