আপ নেতা তথা দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল। — ফাইল চিত্র।
কংগ্রেসের ‘হাত’ ধরে নয়, দিল্লির আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে একাই লড়বে আম আদমি পার্টি! বুধবার সকালে আরও এক বার তা স্পষ্ট করে দিলেন আপ নেতা তথা দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল। বুধের সকালেই সংবাদ সংস্থা এএনআই দাবি করেছিল, আসন্ন নির্বাচন নিয়ে আসন সমঝোতার শেষ পর্যায়ে রয়েছে আপ ও কংগ্রেস। ১৫টি আসনে লড়বেন কংগ্রেসের প্রার্থীরা, ২টি আসন পাবেন ইন্ডিয়া জোটের অন্য শরিকেরা। আর বাকি আসনগুলিতে লড়বে আপ। কিন্তু সংবাদ সংস্থার সেই দাবির এক ঘণ্টার মধ্যেই সব জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে কেজরী জানিয়ে দিলেন, আসন্ন নির্বাচনে কংগ্রেস কেন, কোনও দলের সঙ্গেই জোট করবে না আম আদমি পার্টি।
২০২৫ সালের শুরুতেই দিল্লিতে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। তাতে কোনও জোটের সঙ্গে থাকছে না আপ। অর্থাৎ, সব ক’টি কেন্দ্রেই প্রার্থী দেবে তারা। চলতি মাসের শুরুতেও সে কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন কেজরী। কিন্তু তার পরেও জল্পনা থামেনি। তা আরও বৃদ্ধি পায় মঙ্গলবার ইন্ডিয়া জোটের নেতা শরদ পওয়ারের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের পর। সেই আবহেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আরও এক বার মনে করিয়ে দিলেন, নিজের শক্তিতেই আগামী নির্বাচনে লড়বে আপ।
২০১৫ সাল থেকে দিল্লিতে ক্ষমতায় রয়েছে আপ। ২০২০ সালের বিধানসভা নির্বাচনে দিল্লি বিধানসভার ৭০টি আসনের মধ্যে ৬২টিতেই জিতেছিল আপ। মাত্র ৮টি আসন জোটে বিজেপির। গত ২৬ বছরের চেষ্টাতেও দিল্লির ‘গড়’ ভাঙতে পারেনি কেন্দ্রে টানা তিন বার জিতে আসা দল! খাস রাজধানীতে বারবারই হেরে গিয়েছে তারা।
যদিও এই প্রথম বার নয়, এর আগেও লোকসভা নির্বাচনের সময়ে পঞ্জাবে আপ একা লড়বে বলে জানিয়েছিলেন কেজরী। হরিয়ানার ভোটেও কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও আসন সমঝোতা করেনি আপ। তাই দিল্লির বিধানসভা ভোটেও একার লড়াইয়ের উপরেই আস্থা রাখছেন কেজরী। উল্টো দিকে, দিল্লি কংগ্রেসের সভাপতি দেবেন্দ্র যাদবও সরাসরি বলেছেন, ‘‘আপের সঙ্গে জোট করা কংগ্রেসেরও ‘ভুল’ ছিল। আগামী নির্বাচনে শহরের ৭০টি আসনে একাই লড়বে কংগ্রেস।’’এর মাঝে অবশ্য পাশা উল্টেছে। দলবদল করে আপে যোগ দিয়েছেন বিজেপি ও কংগ্রেসের একাধিক নেতা। আপ-কে ছেড়েও গিয়েছেন কেউ কেউ! দল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছেন দীর্ঘ দিনের আপ নেতা কৈলাস গহলৌত। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নেতার দলত্যাগ নির্বাচনে কী প্রভাব ফেলে, তা নিয়েও চর্চা তুঙ্গে।
দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় গত ২১ মার্চ দিল্লির তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী কেজরীওয়ালকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। তার পর থেকে জেলেই ছিলেন কেজরী। জামিন মঞ্জুর হওয়ার পরেই অবশ্য দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। তাঁর শূন্যস্থানে নয়া মুখ্যমন্ত্রী হন আপ নেত্রী অতিশী মারলেনা, তবে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে কেজরীর চেয়ারটি খালিই রেখে দেওয়া হয়!