শিক্ষকদের দেখে সোজা গাছে কৌশিক। ছবি: সংগৃহীত।
স্কুলে ভর্তির বয়স হয়েছে অথচ স্কুলে যাচ্ছে না, এমন শিশুদের খোঁজে গ্রামে গিয়েছিলেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। অভিভাবকদের কাছে তাঁরা জানতে চান, সন্তানদের কেন স্কুলে ভর্তি করাননি। শিক্ষক-শিক্ষিকারা যখন মায়ের সঙ্গে কথা বলছেন, তখন মনে মনে প্রমাদ গুনল ছয় বছরের খুদে। এ বার নিশ্চয়ই স্কুলে যেতে হবে— এই ভয়ে বাড়ির পাশে একটি বড় গাছের একেবারে মগডালে উঠে পড়ে সে। তাকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে গাছ থেকে নামিয়ে আনতে ঘাম ছুটে গিয়েছে অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে তেলঙ্গানার একটি গ্রামে।
তেলঙ্গানার কুমরমভীম আসিফাবহাদ জেলার দুর্গওয়াড়া গ্রামে গিয়েছিলেন মণ্ডল পরিষদ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। স্কুলছুটদের আবার স্কুলে ফেরাতে তাঁরা অভিযান করেন। সেই সঙ্গে স্কুলে যাওয়ার বয়স হয়েছে, অথচ যে বাচ্চারা স্কুলে যাচ্ছে না, তাদের খোঁজ নেওয়া হচ্ছিল। কৌশিক নামে ছ’বছরের এক শিশুর বাড়িতে যান শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তাঁদের দেখামাত্রই বারান্দা থেকে এক দৌড়ে সামনে একটি বড় গাছের তলায় গিয়ে দাঁড়ায় কৌশিক। শিক্ষক-শিক্ষিকারা যখন মায়ের সঙ্গে কথা বলছেন তখন গাছে উঠে পড়ে শিশুটি। কৌশিক গাছের উপরে বসেই জানিয়ে দেয় কিছুতেই সে স্কুলে যাবে না। মায়ের মুখ কাঁদো কাঁদো। তিনি স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানান, অনেক বার ছেলেকে স্কুলে পাঠাতে চেয়েছেন। কিন্তু স্কুলে কিছুতেই যেতে চায় না সে। এই রকমই সব ঘটনা ঘটায়। তাই আর জোর করেন না।
গাছের মগডালে বসে কৌশিক। গাছের তলা থেকে তাকে বোঝাতে শুরু করেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। কৌশিককে বলা হয়, স্কুলে শুধুই পড়াশোনা হয় না। বরং খেলতে খেলতে অনেক কিছু শিখে ফেলবে সে। স্কুলে গেলে অনেক রকম মজা হবে— শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এমন নানা কথা শুনে পরে গাছ থেকে নেমে আসে ছ’বছরের শিশুটি। ইতিমধ্যে স্কুলের খাতায় কৌশিকের নাম উঠেছে। বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে ইউনিফর্ম আর পড়ার বই।