নীতীশ কুমার। —ফাইল চিত্র।
বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার বার বার দাবি করে এসেছেন, তাঁর আমলে শান্তি ফিরেছে রাজ্যে। কিন্তু সেই বিহারেই ‘খুন হওয়ার আশঙ্কায়’ দিন কাটছে বিধায়কের। তাও আবার নীতীশের জোট সঙ্গী বিজেপির বিধায়কের। পীরপৈঁতির পদ্ম বিধায়ক লালন পাসওয়ান অভিযোগ তুলেছেন, নকশালরা তাঁর থেকে চাঁদা চাইছে। ২০ লাখ টাকা দাবি করা হয়েছে বিধায়কের থেকে। দাবি মতো টাকা না দিতে পারলে, তাঁকে মেরে ফেলা হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন লালন। বিজেপি বিধায়কের অভিযোগ, তাঁর প্রাণ সংশয়ের কথা পুলিশকে জানালেও, পুলিশ সেটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে।
কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন এনডিএ সরকারের অন্যতম শরিক দল নীতীশের জেডিইউ। জোট-নির্ভর সরকারের সমীকরণে নীতীশের দলের গুরুত্ব রয়েছে যথেষ্ট। এ বারের কেন্দ্রীয় বাজেটেও ‘কুর্সি বাঁচানোর লক্ষ্যে’ নরেন্দ্র মোদীর সরকার বিহারের জন্য ঢালাও বরাদ্দ করেছে বলে বিঁধছে বিরোধীরা। এ বার সেই বিহারেই পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলছেন বিজেপি বিধায়ক।
লালনের বিধানসভা কেন্দ্রটি পড়ে ভাগলপুর জেলার মধ্যে। তাঁর দাবি, মুখ্যমন্ত্রী নীতীশকে এবং ভাগলপুরের এসএসপিকে তিনি নিজের আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন। সেই মতো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে কাহলগাঁও মহকুমা পুলিশ আধিকারিককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সংবাদমাধ্যমের কাছে পাসওয়ানের অভিযোগ, “কাহলগাঁওয়ের মহকুমার পুলিশ আধিকারিক বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। দাবি করছেন, তিনি নাকি ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বিষয়টি পুরো খতিয়ে দেখে ফেলেছেন। অথচ, গত চার মাসে এক জনকেও গ্রেফতার করা হয়নি।”
বিজেপি বিধায়কের বক্তব্য, তাঁর বিধানসভা এলাকাটি বিহার ও ঝাড়খণ্ডের সীমানায় অবস্থিত। বেআইনি পাথর খাদান থেকে পাথর কেনা-বেচার জন্য চোরা কারবারিদের মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠেছে এলাকা। তিনি বলেন, “বিষয়টি আমি বিধানসভাতে উত্থাপন করেছিলাম। রাজ্য সরকারও কড়া পদক্ষেপ করেছিল। কিন্তু মূল চক্রীরা এখনও বাইরেই রয়ে গিয়েছে। পাথর-মাফিয়ারা এখন আমাকে ও আমার পরিবারকে নিশানা করছে। আমার সন্দেহ, মহকুমা পুলিশ আধিকারিকও এই একই চক্রের সঙ্গে যুক্ত। ফলে আমি ও আমার পরিবার আশঙ্কার মধ্যে রয়েছি।”
পুলিশের বিরুদ্ধে তাঁর এই অভিযোগের কথা বিহারের মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক। এই পরিস্থিতির একটি বিহিত চাইছেন তিনি নীতীশের কাছে। ‘বন্ধু’ দলের বিধায়কের থেকে এমন অভিযোগ পেয়ে নীতীশও বিহার পুলিশকে পাসওয়ানের আশঙ্কা পর্যালোচনা করে দেখতে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।