সংসদ চত্বরে সোমবার কঙ্গনা রানাউত। ছবি: এক্স (সাবেক টুইটার)।
চলতি সংসদ অধিবেশনে ‘নিট’-এ অনিয়ম নিয়ে শাসক এনডিএকে চেপে ধরেছে বিরোধীরা। তার পাল্টা ‘হাতিয়ার’ হিসাবে এ বার কি পশ্চিমবঙ্গের চোপড়ার ঘটনা নিয়ে সংসদে সরব হতে চলেছে শাসক বিজেপি? সোমবার সকাল থেকে তেমনই ইঙ্গিত মিলছে। সোমবার সংসদে অধিবেশন শুরুর আগেই যে ভাবে বিজেপির মন্ত্রী-সাংসদেরা একের পর এক বিবৃতি দিতে শুরু করলেন এবং সংসদ চত্বরে দাঁড়িয়ে চোপড়ার ঘটনা নিয়ে কথা বললেন, তাতে স্পষ্ট, চোপড়ার ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হলেও এখনই রাজনৈতিক বিতর্কে ইতি পড়ছে না। বরং বিজেপি আরও ‘আক্রমণাত্মক’ ভাবে ওই ঘটনা নিয়ে রাজনীতির ময়দানে নামছে। ঘটনাচক্রে, ওই ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন অভিনেত্রী তথা বিজেপি সাংসদ কঙ্গনা রানাউতও।
হিমাচল প্রদেশের মাণ্ডীর বিজেপি সাংসদ কঙ্গনা লোকসভায় ঢোকার আগে বলেন, ‘‘গত কয়েক দিন ধরে আপনারা দেখেছেন, তৃণমূল-সহ বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র সাংসদেরা সংবিধান হাতে সংসদ চত্বরে দাঁড়িয়ে কী নাটক করছেন! কিন্তু বাংলায় যা হয়েছে, তার অনুমতিও কি সংবিধান দেয়? যে ভাবে ‘অবৈধ’ সম্পর্কের অভিযোগে শরিয়ত আইন বলবৎ করা হচ্ছে, তা সংবিধানে কোথাও বলা হয়েছে? আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ আমার ‘ইন্ডিয়া’র সমস্ত সতীর্থের কাছেই এর উত্তর জানতে চাইব। রাহুল গান্ধীকেও এর জবাব দিতে হবে। গোটা দেশে এ নিয়ে একটা ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।’’ কঙ্গনার বক্তব্যে যেমন মমতার কাছে জবাব চাওয়া হয়েছে, তেমনই জবাব চাওয়া হয়েছে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুলের কাছেও।
অন্য দিকে, সোমবার চোপড়ার ঘটনা প্রসঙ্গে সংসদ চত্বরে দাঁড়িয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘মণিপুরে যখন এক মহিলাকে নিগ্রহ করা হয়েছিল, তখন সেখানে গিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। এখন চোপড়াতেও এক তরুণীকে নিগ্রহের ঘটনা ঘটেছে। এখন তিনি কোথায়? এ বার তিনি চোপড়ায় যান!’’
রবিবার চোপড়ায় এক তৃণমূল নেতার হাতে এক তরুণী এবং তরুণের নিগ্রহের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসে। ভিডিয়োয় দেখা যায়, কঞ্চির ছড়া দিয়ে এক তরুণীকে এলোপাথাড়ি মারছেন এক তৃণমূল নেতা। যাঁর নাম তাজম্মুল ইসলাম ওরফে ‘জেসিবি’। ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। তবে ভিডিয়োটি পোস্ট করে রবিবার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম অভিযোগ করেছিলেন, ‘‘জেসিবি আসলে চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমানের ঘনিষ্ঠ। তাই বহু অপরাধ করলেও তাঁর শাস্তি হয়নি।’’ বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালবীয় পরে একই ভিডিয়ো পোস্ট করে লেখেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের গ্রামে গ্রামে এক একটি সন্দেশখালি লুকিয়ে রয়েছে।’’ তবে চোপড়ার ওই ভিডিয়ো রবিবার ভাইরাল হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা জেসিবিকে। পুলিশ জানায়, তারা ঘটনাটির খবর পাওয়া মাত্র স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করে পদক্ষেপ করেছে। কিন্তু সোমবার বিজেপি সাংসদ এবং মন্ত্রীর বক্তব্যে স্পষ্ট, এত সহজে চোপড়ার ঘটনাটিকে ছাড়ছে না বিজেপি।